বিপদ সীমার ওপরে ৭ নদীর পানি

প্রবল বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে দেশের অধিকাংশ বড় নদনদীর পানি বাড়ছে; নয়টি পয়েন্টে বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে সাতটি নদীর পানি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2014, 06:10 AM
Updated : 19 August 2014, 06:10 AM

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা-পদ্মা এবং মেঘনা নদীসহ ঢাকা সংলগ্ন নদ-নদীগুলোর পনি আগামী ৭২ ঘণ্টায় আরো বৃদ্ধি পেতে পারে।

মঙ্গলবার সকাল ৬টার তথ্য অনুযায়ী, গাইবান্ধায় ঘাঘট নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার প্রধান নদী যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি চারটি পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছিল।

চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র বইছিল বিপদ সীমার ৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে।

আর যমুনা নদী বাহাদুরাবাদ ও সারিয়াকান্দি পয়েন্টে যথাক্রমে বিপদ সীমার ২৭ ও ৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সিরাজগঞ্জে যমুনা বইছে বিপদসীমার সমতলে।  

এছাড়া মঙ্গলবার সকালে এলাসিন ঘাট পয়েন্টে ধলেশ্বরী নদী বিপদ সীমার ১১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছিল।

গত কয়েক দিনে গঙ্গা অববাহিকার নদীগুলোর পানিও ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। বাঘাবাড়ি পয়েন্টে আত্রাই নদী প্রবাহিত হচ্ছে বিপদ সীমার ৩৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে।

ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে মেঘনা অববাহিকার অধিকাংশ নদনদীর পানি বাড়ছে।

সুরমা নদী কানাইঘাটে বিপদ সীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ও সুনামগঞ্জে ৩৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। জারিয়া জাঞ্জাইলে কংশ নদী প্রবাহিত হচ্ছে বিপদসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে।

এদিকে পানি বাড়ার ফলে নদী তীরবর্তী চর ও নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল চন্দ্র শীল আমাদের জেলা প্রতিনিধিকে জানান, যমুনা নদীর তীরবর্তী সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, এনায়েতপুর, চৌহালী, কাজিপুর ও শাহজাদপুর উপজেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি ভাঙন দেখা দিয়েছে।

পানির প্রবল তোড়ে ও ঘূর্ণাবর্তের কারণে এনায়েতপুরে বাঁধের প্রায় ৩০ মিটার এলাকা যমুনায় বিলীন হয়ে গেছে।  

সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. বিল্লাল হোসেন জানিয়েছেন পরিস্থিতি মোকাবেলায় তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

যমুনার পানির চাপে ভাঙন ধরেছে বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও ধুনটের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও স্পারেও।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নূরুল ইসলাম সরকার জানান, রোববার রাতে সারিয়াকান্দির কামালপুর এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৫০ মিটার এলাকা ধসে যায়। সোমবার সকালে নদীতে বিলিন হয়ে যায় ধুনটের শহরাবাড়ি এলাকায় ৭২৭ মিটার স্পারের এক দিকের ৫০ মিটার অংশ।

বগুড়া -১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান ও বগুড়া-৫ (ধুনট-শেরপুর) আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান জানান, জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এদিকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জামালপুর প্রতিনিধি জানান, যমুনার প্রবল স্রোতে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার নোয়ারপাড়ার তারতাপাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২০০ মিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

জেলা প্রশাসক মো. শাহাবুদ্দিন খান জানান, পানিবন্দি লোকজনের সহায়তায় সরকারিভাবে ১২ মেট্রিক টন চাল ও দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।