রাজধানীর গুলিস্তানের ঢাকা ট্রেড সেন্টারের ব্যবসায়ী কামাল হোসেন রিপনের দায়ের করা মামলায় এ পরোয়ানা জারি করা হয়।
এ মার্কেটের দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদে ৬ বছর ধরে রয়েছেন সংসদ সদস্য আফজাল হোসেন।
গত ২৪ জুলাই ঢাকার নির্বাহী হাকিম মাহবুব জামিল এ পরোয়ানা জারি করে বলে বুধবার ঢাকা কোর্ট রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে সংবাদ সম্মেলন করে জানান মামলার বাদী কামাল হোসেন রিপন।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, নীতিমালা ভেঙে নিজের তিন মেয়ের নামে ওই মার্কেটে দোকান বরাদ্দ নেয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর মার্কেটের ব্যবসায়ীরা ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে সংবাদ সম্মেলন করেন।
এরপর থেকে রিপনসহ অন্য ব্যবসায়ীদের আফজাল হোসেনের সহযোগীরা বিভিন্নভাবে হত্যার হুমকি দেয়। এ বিষয়ে বিভিন্ন থানায় ব্যবসায়ী রিপন ৬টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
সংবাদ সম্মেলনে কামাল হোসেন রিপন জানান, উপর্যুপরি হুমকির প্রেক্ষিতে তিনি গত ৯ জানুয়ারি ঢাকার নির্বাহী হাকিমের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৭ ধারায় সংসদ সদস্য আফজালসহ ১৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
গত ২৪ জুলাই মামলার নির্ধারিত দিনে আসামিরা আদালতে হাজির না হওয়ায় বিচারক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন বলে জানান রিপন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিতি বক্তব্যে বলেন, “মার্কেটে একটি দোকান থাকার সুবাদে ২০০৯ সালে কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের এমপি আফজাল হোসেন দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদটি দখল করেন। দুই বছর পরপর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও গত ৬ বছরে আর কোন নির্বাচন না দিয়ে পদটি আঁকড়ে রেখেছেন।”
এ ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, “টানা ৬ বছরে আফজাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন কমিটি সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি ছাড়াই অবৈধভাবে মার্কেটে ৫২৫টি দোকান নির্মাণ করেন। বেজমেন্ট, গাড়ি পার্কিং এবং এক্সেলেটরের সিঁড়ির জায়গাসহ যেখানে ফাঁকা পেয়েছেন সেখানেই দোকান নির্মাণ করেছেন।”
তিনি আরো বলেন, “২০১০ সালের ৩০ মার্চ ১৬, ১২ ও ৮ বছরের তার তিন মেয়েকে ক্ষতিগ্রস্ত হকার দেখিয়ে ৩টি দোকান বরাদ্দ নেন। পরবর্তীতে তা ১৫-২০ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। এভাবে কমিটি দোকান বরাদ্দের মাধ্যমে শতকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
“ব্যবসায়ীরা সমিতির নির্বাচন দাবি করলে ২০১১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি সংসদ সদস্যের সহযোগীরা আমাকে দোকান থেকে তুলে নিয়ে মারধর করে ও দোকানে তালা লাগিয়ে দেয়।”
বিষয়টি তিনি রাজউকের চেয়ারম্যানকেও জানিয়েছেন। সিটি করপোরেশনের একজন নির্বাহী হাকিম এই চক্রকে উচ্ছেদ করতে গেলে তাদেরকে অভিযুক্তরা ফিরিয়ে দেয়।এ বিষয়ে হাই কোর্টে তিনি একটি রিট করেছিলেন, যা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানান।
পুলিশ আদালতের পরোয়ানা তামিল এবং প্রতিবেদন দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাওয়ার পাশাপাশি সাংসদের দুর্নীতির ঘটনা তদন্ত করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি আহবান জানান।