মাঝপথে শতাধিক যাত্রী তোলে পিনাক-৬

কাওড়াকান্দি থেকে মাওয়া আসার পথে লঞ্চ পিনাক-৬ আরেকটি ঘাট থেকে বাড়তি শতাধিক যাত্রী তুলেছিল জানিয়ে নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, এ ঘটনায় নিয়ম মাফিক মামলা করা হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 August 2014, 09:52 AM
Updated : 5 August 2014, 02:17 PM

মঙ্গলবার মাওয়ায় পদ্মা নদীতে লঞ্চডুবির ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। 

তিনি বলেন, “আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, কাওড়াকান্দি থেকে লঞ্চটি ১৬০-১৭০ জন যাত্রী নিয়ে আসছিল। এরপর কাঁঠালবাড়ি লঞ্চঘাট থেকে আরো শতাধিক যাত্রী তুলেছিল।

“যদি কাওড়াকান্দি থেকে সরাসরি মাওয়া আসতো, তাহলে লঞ্চটি হয়তো ডুবত না। বাড়তি এই শতাধিক যাত্রীর চাপ লঞ্চডুবির অন্যতম কারণ বলে মনে হচ্ছে।”

ভবিষ্যতে কেউ যাতে এভাবে ‘মানুষের জীবন নিয়ে খেলতে না পারে’ সেজন্য সরকার কঠোর হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

শাজাহান খান বলেন, “একটা মামলা আমরা করতে বলেছি লঞ্চের মালিক, শ্রমিক ও ব্যবস্থাপনায় যারা ছিল তাদের আসামি করে।”

ঈদফেরত যাত্রীদের চাপের মধ্যে মাদারীপুরের কাওড়াকান্দি ঘাট থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া আসার পথে সোমবার বেলা ১১টার দিকে ডুবে যায় লঞ্চটি।

লৌহজং থানার ওসি তোফাজ্জল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, পিনাকের মতো দোতলা লঞ্চের ধারণ ক্ষমতা হয় ১২০ থেকে ১৫০ জন। তবে লঞ্চটি ডোবার সময়ে সেখানে প্রায় সাড়ে তিনশ যাত্রী ছিল বলে তারা জানতে পেরেছেন।

মঙ্গলবার পর্যন্ত নদী থেকে কেবল দুইজনের লাশ পাওয়া গেছে। স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন ১২৭ ‘নিখোঁজ’ যাত্রীর একটি তালিকা করেছে।

নৌমন্ত্রী জানান, ওই লঞ্চে তার খালাত বোনের তিন মেয়েও ছিল।

“লঞ্চডুবির ঘটনায় কোনো কোনো পরিবারের ১০ জন পর্যন্ত লোক নিখোঁজ হয়েছে। এমনকি আমার খালাতো বোনের তিন মেয়েও লঞ্চে ছিল। তাদের নাম স্বর্ণা, হীরা ও লাকি।”

এই তিনজনের মধ্যে নূসরাত জাহান হীরা (২০) শিকদার মেডিকেল কলেজের এমবিবিএসের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। আর ফাতেমাতুজ জোহরা স্বর্ণা (১৮) চলতি বছর শিবচরের শেখ ফজিলাতুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে ঢাকার বীর শ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজে ভর্তি হন।

খালাতো বোন জান্নাত নাঈম লাকিকে নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলেন হীরা ও স্বর্ণা। এই তিনজনের মধ্যে হীরার লাশ সোমবার উদ্ধার করা হলেও বাকি দুজনের কোনো খোঁজ মেলেনি।

শাজাহান খান বলেন, “আমি প্রথমে বিষয়টি বুঝতে পারিনি। পরে আমার স্ত্রী আমাকে জানায়।”

নৌমন্ত্রী নদী তীরে অপেক্ষমান স্বজনদের খোঁজ খবর নেন এবং দ্রুত উদ্ধারকাজের ব্যাপারে তাদের আশ্বস্ত করেন।

চট্টগ্রাম থেকে বিশেষায়িত নৌযান জরিপ-১০ গভীর রাতে মাওয়া পৌঁছাবে জানিয়ে তিনি বলে, “জাহাজটি পৌঁছালে উদ্ধার অভিযান আরো গতিশীল হবে বলে আমরা আশা করছি।”