সংঘর্ষের পর কুড়িগ্রামের দুই পাড়ায় ১৪৪ ধারা

গত দুই দিনে কয়েক দফা সংঘর্ষের পর কুড়িগ্রাম পৌরসভার দুই পাড়ায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 July 2014, 01:23 PM
Updated : 31 July 2014, 01:23 PM

কুড়িগ্রাম শহরের ধরলা সেতু সংলগ্ন এক নম্বর ওয়ার্ডের সওদাগড় পাড়া ও একতা পাড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে বুধবার সন্ধ্যায় শুরু হওয়া সংঘর্ষের জেরে বৃহস্পতিবারও সংঘর্ষ হলে বিকালে মাইকিং করে ১৪৪ ধারা জারির ঘোষণা দেয়া হয়।

দুই দিনে দফায় দফায় সংঘর্ষে আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক ব্যক্তি। অর্ধশতাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ-লুটপাট চালানো হয়। এছাড়া ১২টি দোকান, ১টি মাইক্রোবাস, ৭টি অটোরিক্সা, ৬টি ভ্যান ও ৫টি রিক্সা ভাঙচুর করা হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিপেটাসহ দুই দিনে ৭২ রাউন্ড টিয়ারসেল ও ১২ রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে। আটক করা হয়েছে ২৮ জনকে।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহাব উদ্দিন এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে জানিয়েছেন, পাঁচ দিন আগে একতা পাড়ার একটি মুচির দোকানে সওদাগর পাড়ার এক যুবকের জামায় অসাবধানবশত জুতার কালি লেগে যায়।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই যুবক মুচির ছেলে শ্রীকৃঞ্চ রবীদাসকে মারধর করলে দুই পাড়ার যুবকদের মধ্যে একাধিকবার হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। সালিস বৈঠকেও সমাধান না হওয়ায় বুধবার রাত ৮টার দিকে উভয়পক্ষ লাঠি-সোঁটা ও দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়।

এসময় কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী রুটে যান চলাচল দেড় ঘণ্টা বন্ধ থাকে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে।

বৃহস্পতিবার সকালে সওদাগড় পাড়ার লোকজন একতা পাড়ার রিক্সাচালক আবেদ আলীকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে একতা পাড়ার লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সওদাগড় পাড়ায় হামলা চালালে আবার সংঘর্ষ শুরু হয়।

বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত থেমে থেমে চলা সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে ১৯ জনকে কুড়িগ্রাম সদর হাতপাতালে ভর্তি করা হয়। গুরুতর আহত হৃদয় ও ওসমান নামে দুইজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এছাড়া অর্ধশত আহতকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

দুপুর দেড়টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হলে কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী সড়কে যান চালাচল স্বাভাবিক হয়।

জেলা প্রশাসক এ বি এম আজাদ ও পুলিশ সুপার সঞ্জয় কুমার কুন্ডু ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেতৃত্ব দেন।

সদর থানার ওসি আব্দুল বাতেন মিয়া জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার ৬৫ রাউন্ড টিয়ারসেল ও ১ রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ।

দুই পাড়ায় শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখা এবং জানমালের নিরাপত্তায় বিকালে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমতিয়াজ হোসেন ১৪৪ ধারা জারি করেন বলে জানান ওসি বাতেন।

আদেশে বলা হয়েছে, আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা ছাড়া অনুমতি ছাড়া অন্য কেউ ওই এলাকায় ঢুকতে পারবে না।

একই সঙ্গে এলাকায় সব ধরনের মিছিল, সভা-সমাবেশও নিষিদ্ধ থাকবে।

দুই গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে।