গ্রিসে বাংলাদেশিদের গুলি: ২ আসামি খালাসে ক্ষোভ

গ্রিসের একটি স্ট্রবেরি খামারে বাংলাদেশি কর্মীদের ওপর গুলির ঘটনায় আদালত চার আসামির মধ্যে খামারমালিকসহ দুইজনকে খালাস দেয়ায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 July 2014, 09:44 AM
Updated : 31 July 2014, 09:49 AM

গ্রিসের রাজনীতিবিদ এবং শ্রমিক অধিকার ও বর্ণবাদবিরোধী সংগঠনগুলো বলছে, এই রায়ে অভিবাসীরা ন্যায়বিচার পায়নি। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বিরোধীদলের পক্ষ থেকেও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

বুধবার গ্রিসের বন্দরনগরী পাত্রাসের একটি আদালত এই রায় ঘোষণার সময়ও বিপুল সংখ্যক অভিবাসী ও শ্রমিক অধিকার কর্মী বাইরে বিক্ষোভ দেখায় বলে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।   

গতবছর এপ্রিলে এথেন্সের ২৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে নিয়া মানোলাদায় ওই খামারের অভিবাসী শ্রমিকরা ছয় মাসের বকেয়া বেতনের দাবি জানালে মালিকের কর্মচারীরা চারজন তাদের ওপর শটগানের গুলি চালায়। এতে আহত হন অন্তত ২৮ জন বাংলাদেশি।

ওই ঘটনার পর গ্রিসে বিদেশি শ্রমিকদের দুর্দশার বিষয়টি সামনে আসে এবং ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে দেশটির সরকার।

মামলায় অভিযুক্ত চার আসামির মধ্যে  খামার মালিকসহ দুই জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত। এর মধ্যে খামারমালিকের বিরুদ্ধে মানব পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছিল।

বাকি দুই আসামির মধ্যে একজনকে ১৪ বছর সাত মাস এবং অন্যজনকে আট বছর ৭ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে আহত করা এবং অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগ আনা হয়।

অবশ্য আপিলের সুযোগ থাকায় এখনই তাদের কারাগারে যেতে হচ্ছে না।

রায়ের পর বাদী পক্ষের আইনজীবি মোসিস কারাবেইদিস বলেন, “একজন গ্রিক হিসাবে এই রায়ে আমার লজ্জা হচ্ছে। এই রায় আদালতের জন্য একটি কলঙ্ক।”

গ্রিসের রাজনীতিবিদরাও মনে করছেন,এই রায় খামার মালিকদের সামনে একটি বাজে নজির তৈরি করল।

দেশটির পার্লামেন্টে বিরোধী দলের সদস্য ও বামপন্থি নেতা ভাসিলিকি কাত্রিভানু বলেন, “এই রায় বিদেশি শ্রমিকদের এই বার্তাই দিল যে আমাদের এখানে কাজ করতে এসে তাদের কুকুরের মতো গুলি খেয়েও মরতে হতে পারে।”

গ্রিসে ফলের খামারগুলোর শ্রমিকদের একটি বড় অংশই অভিবাসী। মানোলাদায় শ্রমিকদের ওপর গুলি বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা ছিল না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

প্রায় এক মাস ধরে চলা এই মামলার শুনানিতে ৪০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের পর বাদিপক্ষের আইনজীবীরা আদালতের কাছে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। অন্যদিকে খামার মালিকদের পক্ষে মামলা লড়েন গ্রিসের শীর্ষস্থানীয় আইনজীবীরা।

এই রায়কে ন্যক্কারজনক আখ্যায়িত করে এর বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বর্ণবাদবিরোধী সংগঠনগুলো। গ্রিক আদালতের নিরপেক্ষতা নিয়েও তারা প্রশ্ন তুলেছে।