জেএমবির ৩ সদস্য ঢাকায় গ্রেপ্তার

রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকা থেকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) তিন সদস্যকে বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকও আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 July 2014, 06:52 AM
Updated : 31 July 2014, 04:14 PM

এরা হলেন- জাহিদুর রহমান(৩৩), শামিন মাহফুজ ওরফে সুমন ওরফে ম্যানরিং মরং (ছদ্মনাম)(৩৮) ও মো. ইসমাইল হোসেন (৩৯)।

তারা আন্তর্জাতিক জঙ্গি দল আল কায়দার আদলে নিষিদ্ধ সংগঠনটি গড়ে তোলার কাজ করছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) সাইদুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বুধবার গভীর রাতে সায়েদাবাদ থেকে ওই তিনজনকে আটক করা হয়।

এই গ্রেপ্তার অভিযান নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপিতে এক সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, “ঈদে তারা রাজধানীতে নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল। ঈদের জামাতেও হামলার পরিকল্পনা ছিল তাদের সংগঠনের কর্মীদের।”

মূলত আটকরা নাশকতা তৈরি করে জেমবি ও আল কায়েদার মতো নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলোর মতাদর্শ প্রচার করার পরিকল্পনা করেছিল বলে ওই তিনজন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছে।

“তাদের মতাদর্শ প্রচারের কাজে তারা ইন্টারনেট, মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ব্যবহার করতো। তাদের একটি ল্যাপটপও আমরা উদ্ধার করেছি।”

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মনিরুল বলেন, “ইন্টারনেটে জঙ্গি তৎপরতা যারা পরিচালনা করছে, তারা যেন সেটি আর না করতে পারে সেজন্য গোয়েন্দারা মনিটর করছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা আছে।”

আটক শামিন মাহফুজ এসএসসি ও এইচএসসিতে স্ট্যান্ড করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ কল্যাণে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন।

পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল বলেন, “ছাত্রজীবন থেকেই সে মেধাবী। তবে তার মেধাকে ভাল কাজে না লাগিয়ে খারাপ কাজে ব্যবহার করতো সে।

ইসলামী ছাত্রশিবিরে যুক্ত হওয়ায় রংপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে সামিন বহিষ্কৃত হয়েছিলেন বলে মনিরুল জানান।

তিনি বলেন,  শামিন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী খুমি সম্প্রদায় নিয়ে পিএইচডি ডিগ্রি নিচ্ছেন। পড়াশোনার ও গবেষণার কথা বলে বান্দরবনের থানচীতে কয়েকমাস ধরেই অবস্থান করে জঙ্গি সংগ্রহের কাজ করছিলেন তিনি।

আটক জাহিদ ও ইসমাইল মূলত শামিনের সহযোগী হিসেবে কাজ করতো জানিয়ে মনিরুল বলেন, “তারা পার্বত্য এলাকায় জঙ্গি তৎপরতা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল। বাংলাদেশে জেমবি ও আলকায়েদাকে সংগঠিত করতে তারা বিভিন্ন প্রচারপত্র তৈরি ও বিলির কাজ করছিল।”

৩ জনই রিমান্ডে

দুই মামলায় তিন জেএমবি সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের হেফাজতে নিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

বিস্ফোরক ও সন্ত্রাস বিরোধী আইনের দুই মামলায় বৃহস্পতিবার বিকালে ১০ দিন করে চাওয়া রিমান্ডের আবেদনের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম অমিত কুমার দে এ আদেশ দেন।

তারা আন্তর্জাতিক জঙ্গি দল আল কায়দার আদলে নিষিদ্ধ সংগঠন গড়ে তোলার কাজ করছিল বলে রিমান্ডের আবেদনে বলা হয়েছে।।

তারা নাশকতা তৈরি করে জেমবি ও আল কায়েদার মতো নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলোর মতাদর্শ প্রচার করার পরিকল্পনা করেছিল বলে রিমান্ডের আবেদনে বলা হয়।

তাদের অন্য সহযোগী, আরো কি কি পরিকল্পনা ছিল তা জানার জন্য তাদের নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়।

এতে আরো বলা হয়, নিজেদের মতাদর্শ প্রচারের কাজে তারা ইন্টারনেট, মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ব্যবহার করতো। তাদের একটি ল্যাপটপও উদ্ধার করা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অপরাধ , তথ্র ও প্রসিকিউশন বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান জানান, আদালতে তিন জঙ্গির পক্ষে কোনো আইনজীবী দাঁড়াননি। কোনো স্বজনও তাদের সঙ্গে দেখা করতে আসেনি।