ঈদ আনন্দ বঞ্চিত পটুয়াখালীর ১৩ গ্রাম

সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের আনন্দে সামিল হতে পারেননি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার পানিবন্দি মানুষ।

পটুয়াখালী প্রতিনিধিসঞ্জয় কুমার দাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 July 2014, 01:30 PM
Updated : 29 July 2014, 01:30 PM

এ ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের কেউ কেউ ঈদ উদযাপন না করার কথাও ক্ষোভের সঙ্গে জানান।

দুই/তিন দিন আগে অমাবস্যার প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে লালুয়া ও চারিপাড়া পয়েন্টের বেড়িবাঁধ না থাকায় চারিপাড়া, নয়াকাটা, পশরবুনিয়া, থঞ্জুপাড়া, ১১নং হাওলা, চৌধুরীপাড়া, বড় ৫ নং, ছোট ৫ নং, নাওয়াপাড়া, মুন্সিপাড়া, মঞ্জুপাড়া, কলাউপাড়া ও বানাতিপাড়া গ্রাম পানিতে তলিয়ে যায়।

এসব গ্রামের ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট এখনো রয়েছে পানির নিচে। রান্নাবান্না করতে পারছে না অনেকেই। চলাফেরা করতে হচ্ছে পানিভেঙে।

লালুয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়াডের্র সদস্য মজিবুর রহমান হাওলাদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, চারিপাড়া গ্রামসহ বহু গ্রাম পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিস্তীর্ণ এলাকা শুধু পানি আর পানি। গ্রামের পর গ্রাম যেন নদী।

প্রবল বাতাসের কারণে জোয়ারের চাপ ঈদের দিন একটু বেশি বলে বাড়িঘর এখনো তলিয়ে আছে। তবে, বৃষ্টি তেমন নেই।  

অনেকের রান্নাঘরে চুলা জ্বালাতে না পারায় রান্নবান্না হয়নি। ট্রলার অথবা নৌকা ছাড়া এসব এলাকার মানুষ যাতায়াত করতে পারছে না, বলেন মজিবুর।

ঈদের দিন (মঙ্গলবার) সকাল থেকেই লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মীর তারিকুজ্জামান তারা এলাকায় গিয়ে খোঁজখবর নেন।

তারিকুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের যেনতেনভাবে মেরামত করা বেড়িবাঁধ বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই ভেঙে যাওয়ায় ১৩টি গ্রাম তলিয়ে থাকে সব সময়।

তিনি জানান, এবার বর্ষা মৌসুমে এসব এলাকার প্রায় ১০ হাজার মানুষ দফায় দফায় পানিতে প্লাবিত হয়ে স্থায়ী পানিবন্দি রয়েছেন।

ছয় ঘণ্টা পর পর জোয়ারের পানি ঢোকে। অপরদিকে পানি নামার সুযোগ না থাকায় ঘরবাড়ি-রাস্তাঘাট তলিয়ে থাকে স্থায়ীভাবে।

তাই গ্রামগুলোর মানুষের মাঝে ঈদের আনন্দ নেই। এমনকি এলাকার কেউ কেউ এবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

চেয়ারম্যান বলেন, ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে থাকায় রান্নাবান্না করার সুযোগ নেই তাদের। স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে এলাকার পানি বিষাক্ত হয়ে উঠেছে। এভাবে থাকলে পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব হওয়ার আশংকা রয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ঈদ উপলক্ষে লালুয়া এলাকার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুই মেট্রিক টন চাল দেয়া হয়েছিল, যা ইতিমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।

এছাড়া ভিজিএফের ১০ কেজি করে চাল প্রতি গরিব পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয় বলেও জানান ইউএনও।