ঘরে ঘরে ঈদ আনন্দ

এক মাস রোজা শেষে আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে বাংলাদেশের মুসলমান সম্প্রদায়।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 July 2014, 05:00 AM
Updated : 29 July 2014, 05:00 AM

দেশের কোটি কোটি মুসলমান সারাদেশে অসংখ্য স্থানে ঈদগাহে কিংবা মসজিদে মঙ্গলবার সকালে ঈদের নামাজ পড়েন একসঙ্গে। এরপর বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিষ্টিমুখ করে আত্মীয়-বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় উৎসবে ঈদের দিনটি কাটাচ্ছেন তারা।  

ঈদ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদও।

বরাবরের মতোই সকালে দেশের প্রধান ঈদ জামাতটি হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে। রাষ্ট্রপতিসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেকে সকাল সাড়ে ৮টায় এই জামাতে শরিক হন।

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সকাল ৭টা থেকে শুরু হয়ে এক ঘণ্টা অন্তর পাঁচটি ঈদ জামাত হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর আগেই জানিয়েছিল, ঈদের দিনে রাজধানীতে বৃষ্টি হতে পারে।সকালে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি মাথায় নিয়েই দলে দলে মানুষ ঈদগাহ ময়দান ও মসজিদে ছোটে ঈদের নামাজ পড়তে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়াও ভাল হতে থাকে। 

প্রতিবারের মত এবারো দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাতটি হয় কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। মাওলানা ফরীদউদ্দীন মাসঊদের ইমামতিতে সকাল ১০টায় এই জামাতে অংশ নেন লাখো মুসল্লি।

দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিদের আসার সুবিধার জন্য ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনেরও ব্যবস্থা করা হয়।

সরকারি ছুটিতে নগর ছেড়ে চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ী অনেকে প্রতিবারের মতো এবারো সপরিবারে গেছেন গ্রামে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে। এই যাত্রায় বরাবর অনেক দুর্ভোগ হলেও এবার অভিযোগ ছিল অনেক কম।

তবে সব মেনে নিয়েই সোমবার সন্ধ্যায় চাঁদ দেখার খবর শোনার পর উৎসবের রঙ ছড়িয়ে পড়ে দেশের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি শাওয়ালের চাঁদ দেখা যাওয়ায় ঘোষণা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাড়ায়-মহল্লায় বাজতে থাকে এই উৎসবের অনুষঙ্গ হয়ে ওঠা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সেই গানটি- ‘ও মন রমজানেরই রোজার শেষে এল খুশির ঈদ’।

এর সঙ্গে সঙ্গে বিদায় নেয় সিয়াম সাধনার মাস রমজান, বাড়িতে বাড়িতে শুরু হয় উৎসবের প্রস্তুতি।

মধ্যপ্রাচ্যে রোববার শাওয়ালের চাঁদ দেখা যাওয়ায় সোমবার সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, জর্ডান, মিশর, ইয়েমেন ও লিবিয়ায় ঈদ উদযাপিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমানরাও ঈদ করেছেন একই দিনে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা

ঈদুল ফিতরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, “ঈদ শান্তি, সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধের অনুপম শিক্ষা দেয়। সাম্য, মৈত্রী ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ করে সব মানুষকে।”

তিনি ব্যক্তি, সমাজ ও জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে ঈদুল ফিতরের শিক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

ঈদুল ফিতরের শিক্ষা সুন্দর ও সমৃদ্ধ সমাজ গঠনে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।

বাণীতে তিনি বলেন, “পবিত্র এ দিনে আমি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ ও মুসলিম উম্মাহর উত্তরোত্তর উন্নতি, সমৃদ্ধি ও অব্যাহত শান্তি কামনা করছি।”

সরকারি কর্মসূচি

ঈদ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল, কারাগার, শিশু পরিবার, ছোটমনি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, সেফ হোমস, ভবঘুরে কল্যাণ কেন্দ্র ও দুস্থ কল্যাণ কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।

বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশনগুলো ঈদের দিন ধরে কয়েকদিন বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। ঈদ উপলক্ষে সংবাদপত্রগুলো বিশেষ সংখ্যাও ইতোমধ্যে প্রকাশ করেছে।

জাতীয় পর্যায়ের সঙ্গে সমন্বয় রেখে স্থানীয় পর্যায়ে সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দেশব্যাপী ঈদের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।

</div>  </p>