যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে শনিবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলন শেষে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল সামরিক শাসকরা করেছিল। গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতার সঙ্গে এটি খাপ খায় না বলেই আলোচনাটা উঠেছে। হওয়াটাও সমীচীন।”
১৯৭২ সালের সংবিধানে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে থাকলেও পরে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান এক সামরিক ফরমানে ওই অনুচ্ছেদ বাতিল করেন। বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা পরে দেয়া হয় ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের’ কাছে।
১৯৭২ সালের সংবিধানে ‘বিচারকদের পদের মেয়াদ’ শীর্ষক ৯৬ অনুচ্ছেদে ২ দফায় বলা হয়- ‘প্রমাণিত ও অসাদচরণ বা অসামর্থ্যের কারণে সংসদের মোট সদস্য সংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতা দ্বারা সমর্থিত সংসদের প্রস্তাবক্রমে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ ব্যতীত কোনো বিচারককে অপসারিত করা যাইবে না।’
শেখ হাসিনা বলেন, “জিয়াউর রহমান সামরিক ফরমান দিয়ে ক্ষমতায় বসে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করে। ইতিমধ্যে জিয়ার শামনামলকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরে আমরা একটি সর্বদলীয় বিশেষ কমিটি করে সংবিধান সংশোধন করি। তখনও বিষয়টি উঠে এসেছিলো। বর্তমানে আইন কমিশন, মানবাধিকার কমিশনসহ অনেকে মতামত দিয়েছে।”
“যেহেতু দেশে সংসদীয় গণতান্ত্রিক ধারা চলছে। সেজন্য ৭২’র সংবিধানের ধারা ফিরিয়ে আনার কথা বলছেন। রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। জনগণের প্রতিনিধিদের হাতেই ক্ষমতা থাকা উচিত।”
২০১২ সালে তৎকালীন স্পিকার ও বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের একটি রুলিংকে কেন্দ্র করে কয়েকজন সংসদ সদস্য হাই কোর্টের একজন বিচারপতিকে অপসারণের দাবি তোলেন। সে সময়ই বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে আনার দাবি জোরালো হয়।
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর সময়ও এ নিয়ে আলোচনা হয়। সে সময় ৯৬ অনুচ্ছেদের পরিবর্তন করা না হলেও আইন কমিশন গত ২৬ জুন সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে একটি সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন জমা দেয়।
গত ১৭ জুলাই আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্তও সংসদের কাছে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের কাছে থাকা ‘অনিবার্য’ বলে মন্তব্য করেন।