ভিড় কমলেও জমজমাট রাজধানীর বিপণী-ফুটপাত

ঈদে ঘরমুখো মানুষ ঢাকা ছাড়তে শুরু করায় ভিড় কমে এলেও শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় জমজমাট রাজধানীর ঈদ বাজার।

সুলাইমান নিলয়শেখ আবদুল্লাহ ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 July 2014, 02:29 PM
Updated : 25 July 2014, 05:50 PM

বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেট, আজিজ সুপার মার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, গাউছিয়া, নিউ মার্কেট, বসুন্ধরা শপিংমলসহ নগরীর বিভিন্ন বিপণীবিতান ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। 

শুক্রবার সকালে ক্রেতা কম থাকলেও দুপুরের পর থেকে ভিড় বেড়েছে বলে জানান এলিফ্যান্ট রোডের পোশাকের দোকানি মো. মিলন।

ঈদ উপলক্ষে কয়েক দিন ধরেই রাত ২টা পর্যন্ত বিক্রি চলছে বলে জানান তিনি।

বিকালে এলিফ্যান্ট রোড এলাকায় কেনাকাটা সেরে এনজিওকর্মী সাদিকুল ইসলাম বলেন, “কাজের ব্যস্ততায় এতোদিন শপিংয়ে আসতে পারিনি। আজ সবার জন্য কেনাকাটা করলাম, রাতেই বাড়ি যাব।”

সায়েন্সল্যাব এলাকায় পাঞ্জাবির দোকানেই ভিড় বেশি। পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন এলাকায় আতর, টুপি ও জায়নামাজের দোকানগুলোতেও ভিড় দেখা গেছে।

গত কয়েক দিনের তুলনায় শুক্রবার গাউছিয়া, চাঁদনী চক, নিউ মার্কেট এলাকার বিপণীবিতানে ভিড় কমলেও যা বিক্রি হচ্ছে তাতে সন্তুষ্ট দোকানিরা।

‘ব্যস্ত’ লোকজন শেষ মুহূর্তে শপিংয়ে এসে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো কিনছেন বলে জানান তারা।

নিউ মার্কেটের জুতার দোকানি আলম খান বলেন, “কয়েক দিন আগেও অনেকেই বেশি বাছাবাছি করতো। হাতে টাইম কম তাই বাছাবাছিও কইম্যা গেছে। বেচাকেনাও মোটামুটি ভালো।”

বসুন্ধরা সিটি শপিংমলে ব্যাংক কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, “বাসার অন্যরা কিছু কিছু শপিং করলেও তাদের সঙ্গে আসা হয়নি। তাই আজ পরিবারের সবাইকে নিয়ে এসেছি।”

মোহাম্মদপুর এলাকার গৃহিণী সুমী সাহাবুদ্দিন বলেন, “সব কেনাকাটা শেষ। মেহেদিসহ প্রসাধন সামগ্রী কিনতে এসেছি। হালকা কিছু কাজ করাতে আজ পার্লারে যাবো।”

স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে বসুন্ধরা সিটিতে আসা রাজাবাজার এলাকার গৃহিণী

সানজিদা হক বলেন, “ছেলে-মেয়েদের বায়না পূরণ করতে তাদের কেনাকাটা আগেই শেষ করেছি। এখন নিজের জন্য, মা-বাবা, শ্বশুর-শাশুড়ির জন্য কেনাকাটা করব।”

তবে সবুজবাগের বাসিন্দা আবুল হাসনাতের কথায় মিলল ভিন্ন সুর।

“ঢাকার রাস্তাঘাটে এমনিতে যানজট লেগে থাকে। আর রোজা এলে তো কথাই নেই। তাই কেনাকাটার জন্য বেরই হইনি।ঢাকায় ঈদ করবো তাই তাড়াও ছিলো না। এখন সবাইকে নিয়ে আসলাম। দুই-একদিনের মধ্যে সব শপিং শেষ করে ফেলব,” বলেন তিনি।

রাজধানীর বসুন্ধরা সিটিতে জুতা, প্রসাধনী, বিভিন্ন ব্রান্ডের তৈরি পোশাকের দোকানগুলোতেই ভিড় ছিল বেশি।

অভিজাত বিপণীবিতানগুলোর পাশাপাশি ফুটপাতের বেচাকেনাও বেশ জমজমাট। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ফুটপাতের দোকানে ক্ষুদ্র আয়ের মানুষের ভিড় রয়েছে।

এদিকে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেট এলাকার দোকানি হাবিবুর রহমান জানান, সৌদি আরবের তৈরি ‘উদ’, ‘লর্ড’, ‘সুলতান’, ‘আলফারেজ’, ‘সিলভার’, ‘আলফে জহুর’, ‘ব্ল্যাক এ্যাকসেস’, ‘ডাহনাল উদ’ ‘ইস্কাদা কালেকশন’, ‘ইগুবস’ আতর এবার বেশি বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া দেশীয় ‘শাহী দরবার’ ও ‘রজনীগন্ধা’ আতরও বেশ বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বায়তুল মোকাররম এলাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে দেশি-বিদেশি জায়নামাজ, টুপি এবং কাঠ ও পাথরের তৈরি তসবি বিক্রি হতে দেখা গেছে।

ঈদ সামনে রেখে মৌসুমী হকাররাও ট্রাফিক সিগন্যালে থামা গাড়ি ও ফুটপাতে বিক্রি করছেন আতর, টুপিসহ নামাজ শিক্ষার বিভিন্ন ধরনের বই।