পটুয়াখালীর জোড়া খুন: যাবজ্জীবনের ১৮ আসামি খালাস

প্রায় এক যুগ আগে পটুয়াখালীর চাঞ্চল্যকর জোড়া খুনে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১৮ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছে হাই কোর্ট, যাদের সবাই আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী।

সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 July 2014, 03:59 PM
Updated : 24 July 2014, 03:59 PM

বিচারিক আদালতের দণ্ডের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিলের শুনানি করে বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের বেঞ্চ এই রায় দেয়।

আদালতে আসামিপক্ষে শুনানি করেন ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও শ ম রেজাউল করিম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এএসএম নাজমুল হক।

খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব হাওলাদার, লতিফ, হাসান, হানিফ ফরাজী, দেলওয়ার ফরাজী, সুলতান ফরাজী, নজরুল ফরাজী, আমির ফরাজী, আবুল ফরাজী, মতিউর, শাহাবুদ্দিন, আ. সাত্তার, আ. মান্নান, আব্দুল হক শিকদার, উত্তম দেবনাথ, নিজাম, মনির হোসেন এবং গৌতম। এদের সবাইকে বিচারিক আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।

গৌতম নামে অন্য এক আসামিকে বিচারিক আদালত ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল। হাই কোর্ট তাকেও খালাস দিয়েছে।

২০০১ সালের ৮ ডিসেম্বর জেলার বাউফল উপজেলার বগা ইউনিয়নের ধান কাটাকে কেন্দ্র করে ফরাজি ও মুন্সি বংশের লোকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে মো. জলিল মুন্সি এবং তার ভাইয়ের ছেলে মো. দোলোয়ার মুন্সি ঘটনাস্থলেই মারা যান।

ঘটনার পর নিহত জলিলের ভাই মুজিবর রহমান মুন্সি বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মুজিবুর বগা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি। মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণা সম্পাদক মোতালেব হাওলাদারসহ ২৮ জনকে আসামি করা হয়, যাদের সবাই আওয়ামী লীগ সমর্থক বলে আসামিপক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন।

বিচারিক আদালতে শুনানির পর ২০০৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর বরিশালের একটি দ্রুত বিচার আদালত আসামিদের ১৮ জনকে যাবজ্জীবন, ১ জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়।

হাই কোর্টে রায়ের পর বাদী পক্ষের আইনজীবী নাজমুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব। ইতোমধ্যে নিয়ম অনুসারে আমি আপিলের নোট দিয়েছি।”

আসামিপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হত্যার ঘটনার পর মূল আসামিদের বাদ দিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কিছু মানুষকে আসামি করা হয়েছিল।

“সাক্ষ্যপ্রমাণে ব্যাপক গড়মিল থাকার পরও বিচারিক আদালত আসামিদের কারাদণ্ড দেয়। আপিলের পর হাই কোর্ট দণ্ডিত সবাইকে খালাস প্রদান করল।”