রাস্তা খারাপ এলজিইডির: যোগাযোগমন্ত্রী

ক্ষতিগ্রস্ত যে সড়কের ছবি গণমাধ্যমে আসছে সেগুলোর দায়িত্ব যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের নয় বলে দাবি করেছেন ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকও নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 July 2014, 01:15 PM
Updated : 24 July 2014, 01:26 PM

ঈদের আগে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পরিদর্শনে গিয়ে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের মোগড়াপাড়া চৌরাস্তায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “সড়ক ও জনপথ বিভাগের কোনো রাস্তা নয়, বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত এলজিইডির রাস্তা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে অন্যায়ভাবে আমাকে আঘাত করা হচ্ছে।”

তবে এই সংবাদের কোনো প্রতিবাদ করবেন না বলেও জানান যোগাযোগমন্ত্রী কাদের।

ঈদের আগে সংস্কার করে মহাসড়কগুলো চলাচল উপযোগী করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেছেন, এবার যাত্রীদের দুর্ভোগ কম হবে।

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর গুলিস্তানে সড়ক পরিদর্শন করেন ওবায়দুল কাদের। এরপর তিনি যান নারায়ণগঞ্জে।

গত সরকারের শেষ ভাগে যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর সড়ক-মহাসড়কে সরেজমিনে পরিদর্শনে প্রায়ই দেখা যায় ওবায়দুল কাদেরকে।

তাকে ইঙ্গিত করে এই ভূমিকার সমালোচনা স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম একবার করলেও ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘স্টাইল’ বদলাবেন না তিনি।

সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে পরিদর্শনে কোনো ‘লাভ’ হচ্ছে কি না-গুলিস্তান মোড়ের যানজট পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “কোথাও গেলে অবশ্যই লাভ হচ্ছে, এই যে গুলিস্তানে এলাম, এখানে ফুটপাতে হকার নেই, যানজট নেই, গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।”

মন্ত্রীর সফর করবেন বলে সকাল থেকেই গুলিস্থান মোড় এলাকার হকার বসার বিষয়ে কড়াকড়ি ছিল। গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্স এর আশেপাশে রাস্তায় কোনো হকার ছিল না।

একাধিক হকার অভিযোগ করেন, ঈদের আগে দুপুর পর্যন্ত বসে থাকায় তাদের ব্যবসায় বিশাল ক্ষতি হয়েছে।

তবে সফর শেষে মন্ত্রী চলে যাওয়া মাত্রই গুলিস্তান মোড় সেই আগের দৃশ্যে চলে যায়।

ঈদের আগ পর্যন্ত সব মহাসড়কের অবস্থা নিজে তদারক করবেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের সোনারগাঁওয়ে সাংবাদিকদের বলেন, এসময় কোথাও যাতে শৃঙ্খলা ভঙ্গ না হয় সে জন্য মোবাইল মনিটরিং টিম, জেলা প্রশাসন, হাইওয়ে পুলিশ, র‌্যাব, জেলা পুলিশসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা যৌথভাবে কাজ করবে।

এর আগে গুলিস্তানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, শুক্র ও শনিবার সবচেয়ে বেশি মানুষ বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেবে।

“এসময় বৃষ্টি হচ্ছে। চ্যালেঞ্জ হলেও এটি অতিক্রম করতে হবে। যেখানে সমস্যা হচ্ছে, সেখানেই মেরামত করা হচ্ছে। জনগণের জন্য সড়ক ‘ই্উজেবল’ করে রাখাই এখন মূল কাজ।”

যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-ময়মনসিংহের মতো মহাসড়কগুলোর বেহাল চিত্র গণমাধ্যমে আসার পর ঈদের আগে এখন চলছে সংস্কার কাজ। 

গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কগুলোতে ইট, সুড়কি, পাথর আর বালি মিশিয়ে ঝটপট গর্ত বুজিয়ে বার কয়েক রোলার চালিয়ে  ‘জোড়াতালির সংস্কার’ চললেও বর্ষার এই সময়ে বৃষ্টিতেও তা ধুয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে।

রাস্তা-ঘাট নিয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, “সমালোচনা হলে বিভিন্ন বিষয় দেখতে পাই, আমাদের লোকেরাও সবসময় সঠিক চিত্র দেয় না। সমালোচনায় অনেক সময় সেই চিত্র পাওয়া যায়।”

২০ জুলাইয়ের মধ্যে সব মহাসড়ক চলাচলের উপযোগী করার ঘোষণার বিষয়ে তিনি বলেন, “কিছু গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে, আমি নাকি মহাসড়ক সংস্কারে আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম।

“মহাসড়ক ও সড়ক নিয়ে আন্ত:মন্ত্রণালয় নিয়ে যে বৈঠক হয়েছিল তার সিদ্ধান্ত আমি জানিয়েছি, আমি কোনো আল্টিমেটাম দেইনি।”

সাংবাদিকদের সঠিক তথ্য তুলে ধরার বিষয়ে অনুরোধ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “অপপ্রচার করে বিভ্রান্ত করবেন না।”

রাজধানীর যানজট পরিস্থিতি এখন ‘স্বাভাবিক’ দাবি করে মন্ত্রী বলেন, “রাস্তার সিগনাল মন্ত্রীর জন্য নয়- এটি ঠিক নয়। আমি সিগনালে দাঁড়িয়ে থাকি, মন্ত্রী হিসেবে সুবিধা নেই না, আমি রং সাইডে যাই না।”