স্থানীয়রা জানান, ২০০৩ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে চরভদ্রাসন উপজেলার সদর, চরহরিরামপুর ও গাজীরটেক ইউনিয়নে বন্যা নিয়ন্ত্রণে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে কোনো তদারকি না থাকায় বাঁধটি এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে।
চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রাজ্জাক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, পদ্মা নদীর তীরে তিনটি জায়গায় মোট ২০ কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে।
এরমধ্যে আছে বালিয়াডাঙ্গি গ্রাম থেকে ফাজিলখাঁরডাঙ্গি হয়ে এমপিডাঙ্গি পর্যন্ত সাত কিলোমিটার, টিলারচর গ্রাম থেকে মৌলভীরচর হাট পর্যন্ত আট কিলোমিটার এবং হাজীডাঙ্গি গ্রাম থেকে শেখেরডাঙ্গি হয়ে মাথাভাঙ্গা গ্রাম পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার।
তিনি বলেন, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বেড়িবাঁধগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে। এগুলো যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে।
রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ও বাঁধের উপর ঘর তৈরি করাসহ নানা অব্যবস্থাপনার কারণে তা ঝুঁকির মুখে রয়েছে বলে তিনি জানান।
গাজীরটেক ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ইউনিয়নের চরআমরাপুর গ্রাম থেকে বাহারুল উলুম মাদ্রাসা পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। বাঁধের ঢালে নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকশ পরিবার বাস করে। এসব পরিবারের সদস্যরা ওই বাঁধের উপর গৃহস্থালির কাজ ও গরু-ছাগল পালন করছে। এতে বাঁধে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কোনো তদারকি নেই বলে দাবি করেন তিনি।
চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ জি এম বাদল আমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, উপজেলার প্রায় ৪৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাই স্বাভাবিক বন্যায় এটা ধসে গেলে ওই এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অবিলম্বে এর সংস্কার কাজ শুরু করতে পাউবোর কাছে অনুরোধ জানান তিনি।
চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
চরভদ্রাসনে ৪৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নাজুক অবস্থায় রয়েছে বলে স্বীকার করেন ফরিদপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল মতিন সরকার।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তহবিলের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে ওই বেড়িবাঁধগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে না। সংস্কার কাজের জন্য চার কোটি ৬০ লাখ টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন হলে অগাস্ট থেকে কাজ করা যাবে বলে তিনি জানান।