প্রচলিত বিচার ব্যবস্থাই ‘অপব্যবহারের’ সুযোগ দিচ্ছে: মজীনা

বাংলাদেশে ‘অভিযুক্তের স্বীকারোক্তির ওপর নির্ভরশীল’ প্রচলিত বিচার পদ্ধতি সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 July 2014, 08:32 AM
Updated : 23 July 2014, 08:32 AM

তার মতে, প্রচলিত পদ্ধতির সংস্কার না হলে বিচার ব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থায় চিড় ধরতে পারে।

মজীনা বলেন, “বর্তমান ব্যবস্থাই হেফাজতে নির্যাতনের সুযোগ করে দিচ্ছে, কেননা সন্দেহভাজনের স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা অনেক বেশি বল প্রয়োগের উৎসাহ পাচ্ছেন। এরপর আর বিচারকের কিছু করার থাকে না।”  

আর এভাবে বিচার ব্যবস্থার ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

ফাইল ছবি

মজীনা আলামত সংগ্রহ, এর প্রক্রিয়াকরণ এবং আদালতের সামনে তা বিশ্বাসযোগ্যভাবে উপস্থাপনের ওপর জোর দেন, যাতে কেউ মিথ্যা অভিযোগে শাস্তি না পায় এবং প্রকৃত অপরাধীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা যায়।

বুধবার রাজধানীর রাজারবাগে ডিটেকটিভ ট্রেইনিং স্কুলে এক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত।

পুলিশ ও অগ্নি নির্বাপক বাহিনীর সদস্য, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ, সরকারি আইনজীবী এবং বিচারকদের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞরাও যোগ দিয়েছিলেন এই আলোচনায়।

ওয়াশিংটন ডিসির মেডিকেল একজামিনার কার্যালয়ের প্রধান; অ্যালকোহল, তামাক, আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর একজন জ্যেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ এবং যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞও সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।  

সেমিনারে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক হাসান মাহামুদ খন্দকার এবং পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান মোখলেসুর রহমানও অংশ নেন।  

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নাগরিকদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দায়িত্ব বহন করে রাষ্ট্র। আর এটি যথেষ্ট কঠিন কাজ, কেননা রাষ্ট্রকে ভুক্তভোগি, অপরাধী এবং পুরো সমাজের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হয়।

“বিচার ব্যবস্থার ওপর সবারই আস্থা থাকতে হবে।… রাষ্ট্র যদি কার্যকর ন্যায় বিচার দিতে ব্যর্থ হয়, তখন জনগণ আস্থা হারায় এবং আইন নিজের হাতে তুলে নেয়। এতে বিচার ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, যা গণতন্ত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।”