বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে কঠোর হওয়ার পরামর্শ

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রণে মন্ত্রণালয়কে আরো কঠোর হওয়ার সুপারিশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

নিজস্ব প্রতিবেদক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফার ডটকমবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2014, 02:02 PM
Updated : 22 July 2014, 02:02 PM

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ধরনের ‘অনিয়ম-দুর্নীতি’ বন্ধে মন্ত্রণালয়কে তদারকি বাড়ানোর পরামর্শও দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে বেসরকারি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (ইউএসটিসি) নিয়ে আলোচনার সময় এ সুপারিশ করা হয়।

চাকরি বিধিমালাসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষক-চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনে প্রায় দুই মাস ধরে বন্ধ রয়েছে ইউএসটিসি।

১৯৯২ সালে ঢাকার বাইরে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন মানছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি আফসারুল আমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে প্রায়ই অভিযোগ ওঠে। মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মনিটরিং-এ আছেন। ইউজিসি রয়েছে, তারপরেও অনিয়ম হচ্ছে। কমিটি এসব বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে কঠোর হওয়ার সুপারিশ করেছে।”

‘নম্বর বাড়িয়ে পাস করিয়ে দেয়া’সহ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিভিন্ন কাজে কোটি কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন হয় বলে গত ৩০ জুন গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে টিআইবি।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়,বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেয়া থেকে শুরু করে অ্যাসাইনমেন্ট, অডিট, ভুয়া সনদ,পাঠ্যক্রম,বিভাগ অনুমোদন ও অনুষদ অনুমোদন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ নিষ্পত্তি, বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য পরিদর্শন,ভিসি, প্রো-ভিসি,ট্রেজারার নিয়োগের অনুমোদন এবং বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমোদনসহ বিভিন্ন কাজে ৫০০ থেকে ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে গবেষণায়।

এছাড়া অনুমোদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) সংরক্ষিত তহবিলের ভুয়া রশিদে তিন কোটি টাকা দেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেও দাবি করে টিআইবি।

তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি আনুষ্ঠানিকভাবে টিআইবির ওই প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউএসটিসি নিয়ে সংসদীয় কমিটির সভাপতি বলেন, “ইউএসটিসির অচলাবস্থা দূর করতে ইউজিসিকে আগামী ১৪ অগাস্টের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। মন্ত্রণালয় ২৯ আগস্টের মধ্যে এই প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে তাদের সুপারিশ আচার্য বরাবর পাঠাবে।

“ইউজিসিকে এর আগেও সময় দেয়া হয়েছিল। এবার যদি তারা ব্যর্থ হয় তবে আচার্য আইন অনুযায়ী প্রশাসক নিয়োগসহ তার সিদ্ধান্ত নেবেন।”

এদিকে অবকাঠামোগত উন্নয়নে জোর না দিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বাড়ানো ও তদারকির সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।

এ বিষয়ে সাংবাদিকদের আফসারুল আমিন বলেন, “কমিটির পক্ষ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয়েছে, অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার তৈরি করে সেটি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।

“একজন অধ্যাপক মাসে কয় দিন ক্লাস নেবেন, কোন বারে কি পড়াবেন সেগুলো অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। ঠিকমতো ক্লাস হচ্ছে কি না সেসবও তদন্ত করতে হবে।”

আফসারুল আমিনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ,মো. আব্দুল কুদ্দুস, জাহাঙ্গীর কবীর নানক, মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ,মো.ছলিম উদ্দীন তরফদার, গোলাম মোস্তফা,এসএম আবুল কালাম আজাদ,মামুনুর রশিদ ও সেলিনা আক্তার বানু অংশ নেন।