সমুদ্রে অপরাধ দমনে নতুন নৌ-কমান্ড গঠন

আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে অর্জিত নতুন সমুদ্রসীমায় অপরাধ দমনের জন্য এবং নৌবাহিনীর কাউন্টার টেররিজম সক্ষমতা বাড়াতে একটি কমান্ড গঠন করা হয়েছে বলে সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 July 2014, 02:14 PM
Updated : 21 July 2014, 02:14 PM

সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বৈঠকে সশস্ত্র বাহিনীর বিভাগের পক্ষ থেকে এর সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নৌবাহিনীর কাউন্টার টেররিজম সক্ষমতা বৃদ্ধির  লক্ষ্যে ‘স্পেশাল ওয়ারফেয়ার ডাইভিং অ্যান্ড স্যালভেজ’ কমান্ড গঠন করা হয়েছে।”

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি সুবিদ আলী ভূঁইয়া বলেন, “নৌবাহিনীর নতুন এই কমান্ড সমুদ্রসীমায় অস্ত্র-মাদক পাচার, মানব পাচার, দস্যুবৃত্তিসহ অপ্রচলিত অপরাধ দমনে সহায়তা করবে।”

বঙ্গোপসাগরে ভারতের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ সাড়ে ২৫ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে প্রায় সাড়ে ১৯ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা বাংলাদেশকে দিয়ে আন্তর্জাতিক সালিশ আদালতের রায় গত ৮ জুলাই প্রকাশ পেয়েছে। তার দুই বছর আগে মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমার বিরোধের নিষ্পত্তি হয়।

সংসদীয় কমিটিতে উপস্থাপিত ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেনাবাহিনীর অধীনে ১১টি উন্নয়ন প্রকল্প সফলভাবে শেষ এবং বর্তমানে আরো ১৩টি প্রকল্প চলমান রয়েছে।

এগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ইউটিলিটি স্থানান্তর (পর্ব-১), ডিসিসি এর জোন-৯ (নিকুঞ্জ) এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত রোড, ড্রেন এবং ফুটপাত উন্নয়ন, জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ চার লেনের সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ, মানিকদী বাজার-সিগন্যাল গেইট-আইএসবি সংযোগ সড়ক, কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক (২য় পর্ব), পার্বত্য চট্টগ্রামে ৫টি সড়ক ও ব্রিজ প্রকল্প,  শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর রানওয়ের দুই পাশে ভূমি উন্নয়ন প্রকল্প, বেড়ীবাঁধ-মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড সংযোগ সড়ক প্রকল্প, রায়ের বাজার কবরস্থান উন্নয়ন প্রকল্প, মাওয়া-যশোলদিয়া ১৩০০ মিটার নদীর ভাঙ্গন প্রতিরক্ষা প্রকল্প, ইমপ্রুভমেন্ট অফ ডিজিটাল ম্যাপিং সিস্টেম, রংপুর সেনানিবাস ও সংলগ্ন এলাকায় ঘাঘট নদীর ভাঙ্গন রোধ প্রকল্প, পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের জাজিরা অ্যাপ্রোচ সড়ক, মাওয়া অ্যাপ্রোচ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়া-২ প্যাকেজ কনস্ট্রাকশন, সুপারভিশন এবং কনসাল্টেশন। 

এছাড়াও আরো ১১টি প্রকল্প ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে জানানো হয়। 

বৈঠকে আরো জানানো হয়, দেশের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে জোরদার করতে শিগগিরই পাহাড়কাঞ্চনপুর, টাঙ্গাইল ও বিমান বাহিনীতে উন্নতমানের রাডার সংযোজন করা হচ্ছে।  

সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বৈঠকে ২০০৯ সালের পর সরকারের সদিচ্ছা ও ঐকান্তিক সহযোগিতায় সশস্ত্র বাহিনীতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ যুদ্ধাস্ত্র, বিভিন্ন ধরনের জাহাজ, ইউনিট, সেনানিবাস ঘাঁটি ও স্থাপনা সংযোজিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করা হয়।

বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর ১ লাখ ১৩ হাজার ২৫৮ জন শান্তিরক্ষী জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে এ পর্যন্ত অংশ নিয়েছে বলে বৈঠকে জানানো হয়। এছাড়া, বর্তমানে বিশ্বের ৯টি দেশে পরিচালিত ৯টি মিশনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ৭ হাজার ৮৩ জন শান্তিরক্ষী নিয়োজিত রয়েছেন।

কমিটির সভাপতি সুবিদ আলী ভূঁইয়ার সভাপতিত্ব বৈঠকে কমিটির সদস্য দীপু মনি, মো. ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা ও হোসনে আরা বেগম অংশ নেন।