ফরমালিন শনাক্তের যন্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ

দেশে ফরমালিন শনাক্তে ব্যবহৃত যন্ত্র নিয়ে আপত্তি জানিয়ে একটি রিট আবেদনের পর ওই যন্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 July 2014, 08:35 AM
Updated : 21 July 2014, 09:35 AM

এ বিষয়ে শুনানি করে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি মো. হাবিবুল গণির বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেয়।

তবে এই আদেশের কারণে ফরমালিনের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান বাধাগ্রস্ত হবে না বলে জানিয়েছেন রিটকারীদের আইনজীবী।

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফুড ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাধন চন্দ্র দাশ ও সেক্রেটারি সিরাজুল ইসলাম গত ১৩ জুলাই হাই কোর্টে এই রিট আবেদন করেন।

এতে অভিযোগ করা হয়, ‘ফরমালডিহাইড মিটার জেড ৩০০’ নামের যে যন্ত্রটি দিয়ে বাংলাদেশে ফলে ফরমালিন পরীক্ষা করা হচ্ছে, তা যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি করা হয়েছে বাতাসে ফরমালিন মাপার জন্য।

তাদের আবেদনের ভিত্তিতে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউটের (বিএসটিআই) মহাপরিচালক এবং ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরোটরির পরিচালককে ওই যন্ত্র পরীক্ষা করে চার সপ্তাহের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

একইসঙ্গে এ বিষয়ে একটি রুলও জারি করেছে আদালত। যথাযথ না হওয়ায় ওই যন্ত্র ব্যবহার করে খাদ্য ও ফলমূলে ফরমালিন পরীক্ষা করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়েছে এই রুলে।

স্বাস্থ্য সচিব, খাদ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান, পুলিশ মহাপরিদর্শক, র‌্যাব মহাপরিচালক, ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের কমিশনার, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিএসটিআইর মহাপরিচালক, ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরোটরির পরিচালক এবং ওই যন্ত্রের আমদানিকারক ট্রেসার ইলেকট্রোকম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোখলেসুর রহমান।

মনজিল মোরসেদ শুনানিতে বলেন, “ফলে ক্ষতিকর রাসায়নিক প্রয়োগ জঘন্য অপরাধ এবং তা বন্ধ করা প্রয়োজন। কিন্তু এই সুযোগে যদি সঠিক যন্ত্র ছাড়া অন্য কিছু দিয়ে পরীক্ষার মাধ্যমে ফরমালিন পাওয়ার অজুহাতে হাজার হাজার টন ফল ধ্বংস করা হয়, তা ব্যবসায়ী, কৃষি ও ভোক্তাদের জন্য হুমকিস্বরূপ। যেহেতু যন্ত্র নিয়েই প্রশ্ন উঠছে, তাই এর পরীক্ষা করা প্রয়োজন।”

এর আগে একটি মামলার রায়ে ফল পাকাতে এবং তাজা রাখতে রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার বন্ধে পাঁচ দফা নির্দেশনা দেয় হাই কোর্ট।

ওই রায়ে বলা হয়, ছয় মাসের মধ্যে দেশের সব স্থল ও সমুদ্র বন্দরে `কেমিকাল টেস্ট ইউনিট' স্থাপন করতে হবে, যাতে আমদানি করা ফল রাসায়নিক পরীক্ষা করে বাজারে ছাড়া হয় এবং রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো কোনো ফল দেশের প্রবেশ না করতে পারে।

এছাড়া রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে কেউ যাতে ফল বিক্রি করতে না পারে সেজন্য কমিটি করে সারা বছর সব ফলের বাজার ও সংরক্ষণাগারে পর‌্যবেক্ষণ চালানোরও নির্দেশ দেয়া হয়।

ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মাছ, ফল, সবজিসহ খাদ্যপণ্যে ফরমালিন শনাক্তের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি ‘ফরমালডিহাইড মিটার জেড ৩০০’ ব্যবহার করা হচ্ছে।