ফের পেছালো খালেদার আবেদনের শুনানি

দুর্নীতির দুই মামলায় অভিযোগ গঠনকারী বিচারকের নিয়োগের বৈধতা নিয়ে আপিল বিভাগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দুই আবেদনের শুনানি আবারো পিছিয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 July 2014, 06:07 AM
Updated : 21 July 2014, 06:07 AM

প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ আগামী ২৪ জুলাই এ বিষয়ে শুনানির পরবর্তী দিন রেখেছে।

হাই কোর্টের আদেশের অনুলিপি না পাওয়ার বিষয়টি আবেদনকারীর আইনজীবীরা সোমবার আদালতকে জানানোর পর নতুন এই তারিখ নির্ধারণ করা হয়।

আদালতে খালেদার পক্ষে ছিলেন এজে মোহাম্মদ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং দুদকের পক্ষে মো. খুরশীদ আলম খান উপস্থিত ছিলেন।

‘জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট’ ও ‘জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট’-এই দুই মামলা বিষয়ে খালেদার আরো চারটি আবেদন ওইদিন শুনানির জন্য রয়েছে।

ঢাকার বিশেষ জজ-৩ বাসুদেব রায় গত ১৯ মার্চ বিএনপি চেয়ারপারসনের উপস্থিতিতে ‘জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট’ ও ‘জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট’ দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠন করেন।

ওই অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে আসেন খালেদা। সেখানে তার আবেদন খারিজ হওয়ার পর এ বিষয়ে আপিল বিভাগে দুটি আবেদন করেন তিনি।

এ দুই মামলা হওয়ার পর তা বাতিল চেয়েও হাই কোর্টে এসেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তার আবেদন খারিজ হওয়ার পর তা আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

২০১১ সালের ৮ অগাস্ট জিয়া ‘দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা’ দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ। এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি।

তেজগাঁও থানার এ মামলায় ‘ক্ষমতার অপব্যবহার করে’ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।

অন্যদিকে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টে অনিয়মের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় অন্য মামলাটি দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন। ২০১০ সালের ৫ অগাস্ট এ মামলার অভিযোগপত্র দেয়া হয়।

এতিমদের সহায়তার জন্য একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে এ মামলায়।

পুরান ঢাকার বকশীবাজার এলাকায় আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আদালতের বিশেষ এজলাস বসিয়ে এই দুই মামলার বিচার চলছে।

বিএনপি নেতারা শুরু থেকেই বলে আসছেন, এই মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এজলাস স্থানান্তরের বিরোধিতাও করে আসছেন তারা।

জিয়া অরফ্যানেজ (এতিমখানা) ট্রাস্ট মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে খালেদা ও তার ছেলে তারেকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে। আর জিয়া চ্যারিটেবল (দাতব্য) ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে আসামি হিসাবে রয়েছেন আরো তিনজন।

এতিমখানা ট্রাস্ট মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বিএনপির সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং প্রয়াত জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

এদের মধ্যে সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আছেন জামিনে। তারেক উচ্চ আদালতের জামিনে দেশ ছাড়ার পর গত ছয় বছর ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। এ মামলায় তাকে পলাতক দেখানো হয়েছে।

দাতব্য ট্রাস্ট মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

এদের মধ্যে হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে। খালেদাসহ বাকি দুই আসামি জামিনে রয়েছেন।