সোমবার ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত বরিশালের পাশাপাশি ঢাকা-মাদারীপুর রুটেও ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। তাদের এই কর্মসূচিতে সমর্থন দিয়েছে ঢাকা জেলা শ্রমিক ইউনিয়ন।
ঢাকার গাবতলীতে বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক জরুরি সভায় রোববার এই ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত হয় বলে হানিফ এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক আবু তালেব কচি জানিয়েছেন।
সমিতির সহ-সভাপতি মো. সামিউল্লাহর সভাপতিত্বে এই সভায় ঢাকা জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্বাস উদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক আতিকউল্লাহ আতিকসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ‘অন্যায্য’ ক্ষতিপূরণ দাবির প্রতিবাদে সোমবার ভোর ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা বরিশাল-ঢাকা এবং মাদারীপুর-ঢাকা রুটে দূরপাল্লার সব বাস চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
তবে এই ধর্মঘটের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন বরিশাল জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি আফতাব হোসেন।
অন্যদিকে ঈদের এক সপ্তাহ আগে এই ধর্মঘট ডাকায় ক্ষোভ জানিয়েছেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য তালুকদার মো. ইউনুস, যিনি ক্ষতিপূরণ নিয়ে সমঝোতা বৈঠকে ছিলেন।
গত ১১ জুলাই বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের উজিরপুরে হানিফ এন্টারপ্রাইজের বাসচাপায় ১২ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়।
হানিফ এন্টারপ্রাইজের কর্মকর্তা তালেব কচি বলেন, নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে সরকার নির্ধারিত ২৫ হাজার টাকা এবং আহতদের প্রত্যেককে ৮ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি আছে মালিকপক্ষ।
এনিয়ে গত ১৯ জুলাই বরিশাল সার্কিট হাউজে সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে তালুকদার ইউনুস ছাড়াও উজিরপুর আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম জামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ সিকদার বাচ্চু, উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবাল, পুলিশ সুপার একেএম এহসানউল্লাহ এবং হানিফ এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
তালেব কচি বলেন, বৈঠকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা নিহতদের ক্ষতিপূরণ বাবদ ৬০ হাজার এবং আহতদের ২৫ হাজার টাকা করে ‘একতরফা’ ক্ষতিপূরণ ধার্য করেন।
সরকার নির্ধারিত ক্ষতিপূরণের চেয়ে বেশি ক্ষতিপূরণ দাবি করার প্রতিবাদে এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ধর্মঘট আহ্বানের খব্র শুনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় তালুকদার ইউনুস বলেন, “তারা ১২ জন মানুষ মারলো, আবার এখন উল্টো তারা মানুষের ভোগান্তির সৃষ্টি করবে, এটা অন্যায়।”
ক্ষতিপূরণের অর্থের বিষয়ে তিনি বলেন, “বাসের চাপায় যে ১২ জন মারা গেছে তারা কেউই বাসের যাত্রী ছিলেন না। তাদের পরিবারে উপার্জনক্ষম আর কেউ নেই। তাই মানবিক কারণেই হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দেয়া উচিত।”