নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসে ‘মুক্তধারা ফাউন্ডেশন’ দুইদিনব্যাপী এই স্মরণ অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক।
‘হুমায়ূন আহমেদ স্মরণে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের শ্রদ্ধার্ঘ্য’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের প্রথমদিনে স্মরণসভায় বক্তারা বলেন, হুমায়ূন আহমেদ তার সৃষ্টির মাধ্যমে বেঁচে থাকবেন এবং সেটা কতোদিন তা সময়ই বলে দিবে।
লেখকের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বক্তারা দাবি করেন, জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন তার সময়ে বাংলাদেশের প্রকাশনাকে ‘সর্বোচ্চ’ পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই হুমায়ূন আহমেদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর তার লেখা গান পরিবেশন করা হয়।
অনুষ্ঠানে লেখকের দুইশ’রও বেশি বইয়ের প্রদর্শনী ছাড়াও তার ওপর জাপানের ‘হুজ হু’র প্রচারিত তথ্যচিত্র দেখানো হয়।
লেখক-প্রাবন্ধিক হাসান ফেরদৌস, বাংলাদেশ থেকে আগত শিশু সাহিত্যিক হুমায়ূন কবীর ঢালী, সাংবাদিক মঞ্জুর আহমেদ, নাসিমুন নাহার নিনি প্রমুখ লেখকের স্মৃতিচারণ করেন।
হাসান ফেরদৌস বলেন, “হুমায়ূন আহমেদ চমৎকার গল্প বলতেন। এই কৃতিত্ব তাকে দিতে হবে। তবে তার লেখা কতোটুকু সাহিত্য হয়ে উঠেছে তা আলোচনার বিষয়। গল্প বলা একজন সাংবাদিকের কাজ, সাহিত্যিকের নয়।
“সাহিত্যিক মানুষের অন্তর্জগৎ উদ্ভাসিত করেন।’
তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধ কোনো কল্পকাহিনী নয়। মুক্তিযুদ্ধ জনজীবনের গল্প। সেই গল্পকে হুমায়ূন আহমেদ সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য ও পাঠযোগ্য হিসেবে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন।”
লেখক-সাংবাদিক ও মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বজিত সাহার সঞ্চালনে অনুষ্ঠিত এই সভায় মঞ্জুর আহমেদ বলেন, “এখন সময় এসেছে আবেগের বাইরে গিয়ে হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্য নিয়ে অ্যাকাডেমিক আলোচনার।
“হুমায়ূন কলকাতাকেন্দ্রিক সাহিত্য থেকে বাংলাদেশে একটি নতুন সাহিত্য জগৎ সৃষ্টি করেছেন।”
নাসিমুন নাহার নিনি বলেন, “হুমায়ূন বাংলাদেশের প্রকাশনা শিল্পকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছে দিয়েছেন।”
শিশু সাহিত্যিক হুমায়ূন কবীর ঢালী বলেন, “হুমায়ূন আহমেদ এমন একজন লেখক অনেকেই তার সমালোচনা করেছেন জীবদ্দশায়। মৃত্যুর পর তারাই আবার সবচেয়ে বেশি হুমায়ূনপ্রেমী হয়ে উঠেছেন।
অনেকে আবার হুমায়ূন আহমেদের মতো হওয়ার চেষ্টাও করেছেন। আসলে হুমায়ূন ছিলেন তার সাম্রাজ্যের সম্রাট।”
প্রায় সারাদিনই নিউ ইয়র্কের বিভিন্ন বরো থেকে হুমায়ূন ভক্তরা মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
জন্মদিন এবং মৃত্যুবার্ষিকীতে হুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ করা ছাড়াও ২০১২ সালে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন লেখকের উপস্থিতিতে নিউইয়র্কে দুদিনব্যাপী হুমায়ূন মেলার গোড়াপত্তন করে।
কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দুই বছর আগে নিউ ইয়র্কেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় হুমায়ূন আহমেদ মারা যান ।