চিকিৎসকদের নিজ নিজ এলাকায় রাখার মত প্রধানমন্ত্রীর

প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের চিকিৎসা সেবা পাওয়া নিশ্চিত করতে চিকিৎসকদের নিজ নিজ এলাকায় পদায়ন দেয়া যেতে পারে বলে মনে করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 June 2014, 01:14 PM
Updated : 19 June 2014, 01:34 PM

রাষ্ট্রের অর্থে পড়াশোনা করে জনগণকে সেবা না দিলে ‘চাকরি হারানোর ভয় থাকবে’ বলেও চিকিৎসকদের সতর্ক করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়ে মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বক্তব্যে নিজের অভিমত জানানোর পাশাপাশি চিকিৎসকদের হুঁশিয়ারি দেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “যার যেখানে বাড়ি তাকে যদি সেখানে নিয়োগ দেয়া যায়, তখন তার এলাকার লোকই তাকে প্রেসার দেবে যে, আমাদের রেখে ঢাকায় গিয়ে বসে থেকো না। এই চাপটা কিন্তু অটোমেটিক তাদের ওপরে আসবেই।

“প্রত্যেক বিভাগে যদি সেভাবে নিয়োগ দেয়া যায়, তাহলে তারা মনে হয় থাকতে বাধ্য হবে।”

ঢাকা ছেড়ে উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে চিকিৎসকদের না থাকার প্রবণতা নিয়ে অনেকদিন ধরেই আলোচনা চলছে। সরকার চাপ দিয়ে, প্রণোদনা দিয়ে এই প্রবণতা দূর করতে চাচ্ছে।

গত সপ্তাহে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম সংসদে বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ডাক্তারদের প্রণোদনা দেয়া হবে। ৩ বছর উপজেলায় চাকরি করলে ভালো পোস্টিং দেয়া হবে।”

চিকিৎসকদের সতর্ক করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যে কন্ডিশন দেয়া হয়েছে যে নির্দিষ্ট সময় না থাকলে তাদের চাকরি স্থায়ী হবে না, প্রশোমন হবে না এবং চাকরি হারাবারও ভয় থাকবে।”

তবে নিয়োগ বা বদলির ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দেন তিনি।

“ডাক্তারদের বদলির সময় একটু লক্ষ্য রাখতে হবে। একটি ইয়ং মেয়েকে যদি সেন্ট মার্টিনস-এ বদলি করেন, তার পক্ষে সেখানে সেখানে যাওয়া-থাকা দুস্কর।”

বাংলাদেশে উপজেলা পর্যায়ে ৪৬৭টি সরকারি হাসপাতালে শয্যা রয়েছে ১৮ হাজার ৭৮০টি। জেলা থেকে জাতীয় পর্যায়ে ১২৬টি হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ২৬ হাজার ৮৪১টি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে ১৫৩টি উপজেলা হাসপাতালকে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে, বাকিগুলোকেও পর্যায়ক্রমে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হবে।

বর্তমানে বাংলাদেশে একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থাকলেও আরো কয়েকটি গড়ে তোলার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

“রাজশাহী ও চট্টগ্রামে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া উচিত। ডাক্তারদের উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য প্রতিটি বিভাগে একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করা দরকার এবং সেটা আমরা করবো।”

এছাড়া প্রতিটি বিভাগ ও জেলা হাসপাতালে বার্ন ইউনিট করা হবে বলেও আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দেশের ১৩৫৭৭টি কমিউনিটি ক্লিনিক নিয়েও কথা বলেন, যেখানে গ্রামের মানুষদের ২৯ ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে দেয়া হয়।

“১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন শুরু করি। তখন ৪ হাজার চালু হয়েছিল। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় এসে বন্ধ করে দেয়। ২০০৯ এ এসে আবার আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করি।”