এমডিজি: বাংলাদেশের প্রশংসায় মুনের উপদেষ্টা

দারিদ্র্য বিমোচনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জনের প্রশংসা করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের ‘সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি)’ সম্পর্কিত বিশেষ উপদেষ্টা জেফরি ডেভিড স্যাকস।

যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 June 2014, 06:09 AM
Updated : 19 June 2014, 07:31 AM

তবে বাংলাদেশের অগ্রগতির ধারা ধরে রাখতে এবং তাকে আরো এগিয়ে নিতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বুধবার নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশ মিশনে ‘বাংলাদেশ অ্যান্ড এমডিজিস: রোডম্যাপ টু সাসটেইনেঅ্যাবল ডেভেলপমেন্ট’  শীর্ষক এক আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন।

এ সময় গত কয়েক বছরে নানা ধরনের সমস্যা সত্ত্বেও দারিদ্র্য বিমোচন, নারী শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়ন, মানুষের জীবনমানের উন্নয়নে বাংলাদেশের অর্জনের প্রশংসা করেন কফি আনানের সময়েও একই দায়িত্ব পালন করা এই অর্থনীতিবিদ।

তিনি বলেন, “সীমিত সম্পদ নিয়ে শুরু করা উন্নয়ন প্রকল্পে সমগ্র জনগোষ্ঠীকে একত্রিত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।”

উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে ত্বরাণ্বিত করতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা জরুরি মন্তব্য করে স্যাকস বলেন, “এ ব্যাপারে সকল রাজনৈতিক দলের মধ্যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠা দরকার।”

জাতিসংঘ স্বীকৃত বিশ্ব বাণিজ্যে প্রান্তিক অবস্থানে থাকা ৪৯টি স্বল্পোন্নত দেশের উন্নয়নের জন্য উন্নত দেশগুলোকে সুনির্দিষ্ট সহায়তা পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান জাতিসংঘ মহাসচিবের এমডিজি সর্ম্পকিত এ উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, “বিশ্বব্যাপী বৈষম্য নিরসন করা না গেলে মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল পুরোমাত্রায় অর্জন করা কঠিন।”

২০১৫ সাল পরবর্তী বিশ্বকে সত্যিকার অর্থে বসবাসের উপযোগী হিসেবে গড়া তোলার জন্য দারিদ্র্য বিমোচন ও জলবায়ু পরিবর্তনের যে আশঙ্কা করা হচ্ছে তা দূর করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন জেফরি ডেভিড স্যাকস।

এর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুর উপর বেশি গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানুষের বসতি বিপন্ন, সামাজিক ভারসাম্য, নিরাপত্তা ও খাদ্য নিরাপত্তা অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে। এ অবস্থায় দারিদ্র্য বিমোচনের প্রত্যাশা পূরণ হওয়া সম্ভব নয় কোনভাবেই।”

জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং ধনী দেশগুলোই এজন্য দায়ী হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তাই জলবায়ু পরিবর্তন রোধে যাবতীয় কর্মকাণ্ডে অর্থ সরবরাহ করতে ধনী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান স্যাকস।

আলোচনায় জাতিসংঘের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত/হাই কমিশনার, স্থায়ী প্রতিনিধি ও যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম কর্মীরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানের প্রেক্ষাপট উপস্থাপন করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এ কে আব্দুল মোমেন।

দুর্যোগপ্রবণ দেশ হওয়া সত্ত্বেও দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ তা মোকাবেলা করা শিখতে সক্ষম হয়েছে  বলে মন্তব্য করেন আব্দুল মোমেন।

তিনি বলেন, “মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল অর্জনের প্রধান অন্তরায় যেখানে জলবায়ু পরিবর্তন, সেখানে বাংলাদেশ তা অর্জনের পথে রয়েছে। এখন প্রয়োজন শুধু উন্নত বিশ্বের সহায়তা।”

আলোচনায় অংশ নিয়ে ইউএনডিপির মানব উন্নয়ন সম্পর্কিত পরিচালক খালিদ মালিক বলেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে প্রযুক্তির ঘাটতি রয়েছে। তাই সেসব দেশে জাতিসংঘের আওতায় প্রযুক্তি ও গবেষণা কেন্দ্রের আঞ্চলিক কেন্দ্র স্থাপন করা প্রয়োজন।

বিশ্ব বাণিজ্যে স্বল্পোন্নত দেশগুলো পিছিয়ে আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো যাতে সহজে ও বিনা শুল্কে রপ্তানি করতে পারে সেজন্য উন্নত দেশগুলোকে তাদের বাণিজ্য নীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে।