পাহাড় দখল বন্ধে আদালতের ‘হস্তক্ষেপ’ প্রত্যাশা

পাহাড় দখল ও ধ্বংসে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের দুষ্টচক্রের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগের ‘সদয় হস্তক্ষেপ’ কামনা করেছে চট্টগ্রামের নাগরিক সমাজ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 June 2014, 03:54 PM
Updated : 11 June 2014, 04:48 PM

বুধবার বিকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত নাগরিক স্মরণসভা থেকে এই প্রত্যাশার কথা জানানো হয়।

২০০৭ সালের ১১ জুন চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে ১২৭ জন নিহতদের স্মরণে এই সভা আয়োজন করে পরিবেশবাদী সংগঠন ‘পিপলস ভয়েস’।

সভার শুরুতে ২০০৭ সালের পর থেকে চলতি বছর পর্যন্ত পাহাড় ধসে নিহত সব মানুষের উদ্দেশে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

সভায় পিপলস ভয়েসের আহ্বায়ক শরীফ চৌহান ১১ জুনকে জাতীয় পাহাড় রক্ষা দিবস ঘোষণার দাবি জানান।

সভায় পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি ডা. একিউএম সিরাজুল ইসলাম বলেন, পাহাড় দখলকারী ক্ষমতাবানরাই দরিদ্রদের ঢাল হিসেবে ব্যবহারের জন্য পাহাড়ে বসবাসের সুযোগ দেয়।

“আমরা অত্যন্ত আতঙ্কিত- এখন ব্যক্তির সঙ্গে সরকারি সংস্থার দুষ্টচক্র যুক্ত হয়েছে পাহাড় দখলে। এক্ষেত্রে নাগরিকদের পাশাপাশি রাষ্ট্রেরও দায়িত্ব আছে।”

সিরাজুল ইসলাম বলেন,  পাহাড় রক্ষায় আইন প্রণয়নে সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রীদেরও দায়িত্ব পালন করতে হবে।

“যখনি আমরা বিভিন্ন বিষয়ে অসহায় হয়ে যাই, তখন বিচার বিভাগ হস্তক্ষেপ করে। পাহাড় রক্ষার দাবিতেও আশা করি, বিচার বিভাগ সদয় হয়ে এগিয়ে আসবে।”

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার বলেন,“দখলদারের তালিকায় আগে শুধু ব্যক্তি ছিল। এখন যোগ হয়েছে সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা। এখন অনিয়মই নিয়ম।”

শরীফ চৌহান বলেন, জাতীয় পাহাড় রক্ষা দিবসের দাবি বাস্তবায়নে এবার বছরব্যাপী কর্মসূচি পালন করা হবে। জুলাই থেকে জনসংযোগ, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, মত বিনিময়, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক এবং সমাবেশ করা হবে।

চট্টগ্রামের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ‘পাহাড় রক্ষা কমিটি’ গঠন করে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।

সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর রেহানা বেগম রানু, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস, প্রমা আবৃত্তি সংগঠনের সভাপতি রাশেদ হাসান, উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক সুনীল ধর, উন্নয়ন সংস্থা উৎস’র নির্বাহী পরিচালক মোস্তফা কামাল যাত্রা।

উপস্থিত ছিলেন কারিতাস চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পরিচালক জেমস গোমেজ,বর্ণালীর নির্বাহী পরিচালক সালাউদ্দিন কবির সুমন, খেলাঘর মহানগরী কমিটির অর্থ সম্পাদক মোরশেদ আলম, পিপলস ভয়েসের শ্যামল মজুমদার, সৈয়দ মুহাম্মদ আতিকুর রহমান ও শিক্ষিকা সালমা জাহান মিলি।

সভায় সংহতি জানায় প্রমা, উদীচী, ছাত্র ইউনিয়ন, খেলাঘর, উৎস, পরিবেশ ছাত্র ফোরাম ও বর্ণালী। সভা শেষে শহীদ মিনারের পাদদেশে নিহতদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়।