হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হলো দুই র‌্যাব কর্মকর্তা

পাঁচ দিনের হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের পর র‌্যাব-১১ এর সাবেক কমান্ডারসহ দুই কর্মকর্তাকে নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 May 2014, 12:45 PM
Updated : 22 May 2014, 01:39 PM

সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ ও মেজর আরিফ হোসেনকে বৃহস্পতিবার বিকালে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে নারায়ণগঞ্জের বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মামুনুর রশীদ মণ্ডল হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাবেক দুই সেনা কর্মকর্তাকে ফের ১০ দিনের হেফাজতে চাইলে বিচারক কে এম মহিউদ্দিন তাদের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

নারায়ণগঞ্জের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় হাই কোর্টের নির্দেশে গত ১৭ মে তারেক ও আরিফকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তখন তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে চাইলে আদালত পাঁচ দিনের হেফাজত মঞ্জুর করেন।

একই ঘটনায় গ্রেপ্তার র‌্যাব-১১ এ তারেক ও আরিফের সহকর্মী সাবেক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম এম রানার রিমান্ডের মেয়াদ এখনো শেষ না হওয়ায় এদিন তাকে আদালতে তোলা হয়নি।

নিহত নজরুলের পরিবারের অভিযোগের পর সামরিক বাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাকে সাতখুনের ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেন নারায়ণগঞ্জের আইনজীবীরা।

তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই তিনজনকে কেন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি তার কারণ ব্যাখ্যা করতে তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।

গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের আদালত থেকে সিদ্ধিরগঞ্জে যাওয়ার পথে কাউন্সিলর নজরুল ও আইনজীবী চন্দনসহ সাতজন অপহৃত হন। তিনদিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ ভেসে ওঠে।

লাশ উদ্ধারের আগের দিন ওই তিন কর্মকর্তাকে র‌্যাব-১১ এর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে আনা হয়।

সাতজনকে অপহরণের পরপরই নারায়ণগঞ্জের আরেক কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা হয়, যা পরে হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।

লাশ উদ্ধারের পর নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, নূর হোসেন ও তার সহযোগীদের কাছ থেকে ছয় কোটি টাকা নিয়ে তার জামাতাসহ সাতজনকে খুন করেছেন র‌্যাব সদস্যরা।

ওই অভিযোগ তদন্তে র‌্যাবের পক্ষ থেকে কমিটি গঠনের পর সেনা কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদ ও আরিফ হোসেন এবং নৌবাহিনীর কর্মকর্তা রানাকে চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। এদের মধ্যে তারেক সাঈদ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাতা।

তিন কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত হওয়ার পর একটি রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই হত্যাকাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।