পরিবেশ রক্ষার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে বাংলাদেশকে বাঁচাতে পরিবেশ রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2014, 07:41 AM
Updated : 15 May 2014, 07:42 AM

বৃহস্পতিবার পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের সময়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বক্তব্যে তিনি জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি এবং সমুদ্র থেকে ভূমি উদ্ধারের কথাও বলেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, “অনেকে বলেন, সমুদ্রের পানি বৃদ্ধি পেলে বাংলাদেশের অনেকাংশ তলিয়ে যাবে। এজন্য, নদীর নাব্যতা বাড়াতে হবে। যেন পানির প্রবাহ বাড়ে।

“এছাড়া সমুদ্রে জমি উদ্ধার করতে হবে। প্রচুর ডুবোচর জেগেছে। আরেকটি বাংলাদেশ পেতে পারি। ব্যাপক বৃক্ষ রোপণ করে জমি উদ্ধার করতে হবে।”

সকালে সচিবালয়ে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের এই অনুষ্ঠানে বক্তব্যে অপরিকল্পিতভাবে খাল ও জলাশয় ভরাট এবং বক্স কালভার্ট নির্মাণে অসন্তোষও প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

“যেখানে সেখানে খালের মধ্যে বক্স কালভার্ট নির্মাণ করে কী যে সর্বনাশ করা হয়েছে। পান্থপথ এবং সেগুনবাগিচা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত খালের ওপর বক্স কালভার্ট নির্মাণ না করে, খালের দু’পাশে রাস্তা করা যেত।”

পুকুর ভরাট করে ভবন তৈরি ঠেকাতেও সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন শেখ হাসিনা।

কাকরাইলে পুকুর ভরাট করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কার্যালয় নির্মাণ করায় বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, “জনস্বাস্থ্য এতই সচেতন যে পুকুর ভরাট করে বিল্ডিং করেছে!

“শুরু সেই আইয়ুব খানের সময় থেকে। মতিঝিল ভারট করা করা হল, সেগুনবাগিচার সেই বিরাট পুকুর ভরাট করা হল। অনেক অস্বাভাবিক ঘটনা আমাদের দেশে ঘটে।”

বর্জ্য এবং বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য পরিকলপনা গ্রহণের ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।

“পরিকল্পিতভাবে এগোলে কোনো সমস্যা থাকে না। আমাদের পরিকল্পিতভাবে কিছু হয়নি। মাস্টার প্লান করলে কোনো অসুবিধা হবে না।”

বুড়িগঙ্গাকে দূষণমুক্ত করতে পরিবেশ ও বন, নৌ-পরিবহন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।

“বুড়িগঙ্গা দেখলে চোখে পানি চলে আসে,” নিজের আক্ষেপ জানিয়ে তিনি বলেন, নদীর পার সংরক্ষণ এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থা করতে হবে।

“ভালো করে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করে দিতে হবে, যাতে সব বর্জ্য এক পয়েন্টে এটিপিতে যায়। টাকা কিছুটা খরচ হবে, কিন্তু তা দূষণের তুলনায় কিছুই না।”

বন গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, “কোন ধরনের গাছ আমাদের বেশি প্রয়োজন তা খুঁজে বের করতে হবে।”

তিন দশক আগে উত্তরবঙ্গে ইউক্যালিপটাস গাছ লাগানোর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা মাটির রস চুষে খায়। এটা কেনো উত্তরবঙ্গে লাগানো হলো- তা বোধগম্য নয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন গবেষণার মাধ্যমে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০টি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া টিস্যু কালচার পদ্ধতির মাধ্যমে বনজ, ফলজ বৃক্ষ ও ১২ প্রজাতির বাঁশের বংশ বৃদ্ধির কৌশল উদ্ভাবন করা হয়েছে।

বায়ু দূষণের মাত্রা হ্রাসে আধুনিক প্রযুক্তিতে ইট নির্মাণের কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।

পরিবশে ও বন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং প্রতিমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব উপস্থিত ছিলেন।