আপিল চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করা হয়েছিল।
তবে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সোহরাওয়ার্দী ও মো. মনিরুজ্জামান রুবেল। আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মাহবুব উদ্দিন খোকন।
“আমাদের বক্তব্যের বিপরীতে আসামিপক্ষ রায়কে সঠিক বলে। আদালত শুনানির পর ‘নো অর্ডার’ দেয়।”
এই মামলায় হাই কোর্ট থেকে খালাস পাওয়াদের মধ্যে চট্টগ্রামে পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ইসলামী ছাত্রশিবিরের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন খানও রয়েছেন।
২০০৫ সালে গ্রেপ্তার হলেও পরে জামিন নিয়ে এই আসামি বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যান। ইন্টারপোলের মাধ্যমে ২০১২ সালে দিল্লি থেকে তাকে ফেরত আনা হয়।
১৪ বছর আগে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে ছাত্রলীগের গাড়িতে হামলা চালিয়ে আট জনকে হত্যার দায়ে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল বিচারিক আদালত।
দণ্ডিত অন্য তিনজন হলেন- আলমগীর কবির ওরফে মানিক, আজম ও মো. সোলায়মান। এরা সবাই ছাত্রশিবিরের কর্মী।
২০০৮ সালে দেয়া নিম্ন আদালতের এই রায়ের পর গত ১৭ এপ্রিল হাই কোর্ট আপিলের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সবাইকে খালাস দেয়।
তবে আপিল না করায় এই মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ নিয়ে পলাতক তিন আসামির বিষয়ে হাই কোর্টের রায়ে কিছু বলা হয়নি। ফলে তাদের রায় বহাল রয়েছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।
এই তিন আসামি হচ্ছেন, এনামুল হক ওরফে এনাম, মো. আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী ওরফে রিমন ওরফে ইমন ও হাবিব খান।
২০০০ সালের ১২ জুলাই চট্টগ্রাম শাহ আমানত সেতুর সংযোগ সড়কে দিনের বেলায় আড়াআড়ি বাস রেখে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীবাহী মাইক্রোবাস আটকে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয় আটজনকে।
শিবিরকর্মীরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে তদন্তে বেরিয়ে আসে।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও কারা, কাকে গুলি করেছে, সেই চাক্ষুস সাক্ষী না থাকায় আসামিরা খালাস পেয়েছেন বলে আইনজীবীরা মনে করছেন।
এছাড়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণের প্রক্রিয়া যথাযথ না হওয়ায় আসামি সোলায়মান খালাস পায় বলে জানান তারা।
২০০০ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের খুনের এই ঘটনায় দেশজুড়ে আলোচনা উঠেছিল।
চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানার কালামিয়ার বাজারে মহানগর ছাত্রলীগের এক সমাবেশে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন ছাত্রলীগের ওই নেতা-কর্মীরা। পথে তারা হামলার মুখে পড়েন।
গুলিবর্ষণে ঘটনাস্থলেই পাঁচজন নিহত হন। এরা হলেন, মো. হাসিবুর রহমান হেলাল, রফিকুল ইসলাম সোহাগ, জাহাঙ্গীর হোসেন, আজিজুল ইসলাম বাবু, গাড়িচালক মনু। পরে হাসপাতালে মারা যান আবুল কাশেম, জাহাঙ্গীর আলম ও জাহিদ হোসেন।