২৪ এপ্রিল আজকের এই দিনে ভয়াবহতম ভবন ধসে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ১৩৫ জন।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নিহত শ্রমিকদের শ্রদ্ধা জানাতে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন, পোশাক কারখানার শ্রমিক, পেশাজীবী, সাধারণ জনগণ, আহত- নিহতদের স্বজন ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপের সামনে জড়ো হতে থাকেন।
বেলা বাড়ার সঙ্গে ওই এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে। থেমে যায় সড়কে যান চলাচল।
এ সময় বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার ফাঁসির দাবিতে মহাসড়কে স্লোগান দিতে থাকেন।
বছর ঘুরে একই দিনে সেই বিভীষিকাময় ঘটনার সাক্ষী আর ক্ষতির শিকার মানুষগুলোর সজল চোখ উপচে যেন পড়ছে দুঃসহ স্মৃতির কান্না। ক্ষুব্ধ কারো কারো কণ্ঠে শোনা গেছে ক্ষতিপূরণের দাবি।
হাতে ছবি নিয়ে ঘোরাঘুরি করছিলেন নিখোঁজ অনেকের স্বজনরা। এদেরই একজন রহমান খান ও ছাটু খাতুন ছেলে আজম খানের ছবি নিয়ে রানা প্লাজার সামনে দাঁড়িয়ে নির্বাক তাকিয়ে ছিলেন।
রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাবারে সবাই তো তাদের স্বজনগো লাশ পাইলো। কিন্তু আমার আজমরে পাইলাম না।”
ফরিদপুরের ছেলে আজম কাজ করতেন রানা প্লাজার ছয় তলায়। তার বেতন দিয়েই সংসার চলতো বলে জানান ছাটু খাতুন।
“কেউ কি আমার কইতে পারবা, আমার পোলার কবর কোনটা” তার এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি কেউ।
নিখোঁজ রাজবাড়ির রাশেদা বেগমের সন্ধান করছেন তার মা মর্জিনা বেগম। তাই রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপে কোনো হাড়গোড় পাওয়া গেলেই ছুটে আসেন।
“কাল বিকালেও হাড়গোড় ও জামাকাপড় পাওয়া গেছিল। ছুইটা আইছিলাম, কিন্তু কেউ বললো না, এটা কার হাড়,” বলেন তিনি।
সকাল সোয়া ৯টার দিকে ঢাকা জেলা প্রশাসক, ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারকে নিয়ে নিহতদের স্মরণে তৈরি স্মৃতিস্তম্ভের পাশে টিনের ঘেরা স্থানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় স্থানীয় প্রশাসন।
এর পর থেকেই গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা, বাংলাদেশ গামের্ন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশন, বাংলাদেশ সেন্টার ফর সলিডারিটি, আজিম গ্রুপ, টেক্সটাইল গামের্ন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন, গামের্ন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, বাংলাদেশ গামের্ন্টস শ্রমিক সংহতি, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ফুল দিয়ে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।
এ সময় তারা ভবন মালিক সোহেল রানার ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দেয়।