কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমানের কাছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে পাঠানো একটি চিঠিতে জামায়াতে ইসলামীর প্রভাবপুষ্ট বলে পরিচিত ব্যাংকটিতে ‘ঘটে যাওয়া দুর্নীতি’ সম্পর্কে দ্রুত তথ্য পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান সরকার গত ১৫ এপ্রিল পাঠানো ওই চিঠিতে সই করেছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, “ইসলামী ব্যাংকে ঘটে যাওয়া অনিয়ম-দুর্নীতি সম্পর্কে ইতিপূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু তথ্য দিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করেছে। আরো কিছু অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এসেছে।
“এসব ক্ষেত্রে যে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রয়োজন। আশা করছি, দ্রুত তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবেন।”
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আসা ইসলামী ব্যাংকের ‘দুর্নীতির’ অভিযোগের নথিপত্রের অনুলিপি ওই চিঠির সঙ্গে সংযুক্ত করে গভর্নরের কাছে পাঠানো হয়েছে।
চিঠির কোনো জবাব এখনো আসেনি বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগ ওঠার পর কয়েকবছর ধরেই আন্তর্জাতিক চাপে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক।
এইচএসবিসি যুক্তরাজ্য, সিটি ব্যাংক এনএ, ব্যাংক অব আমেরিকা ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন বন্ধ করে দেয়।
দেশের মধ্যে ঋণ বিতরণেও ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন অনিয়ম ধরা পড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে।
সম্প্রতি লাখো কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়ার অনুষ্ঠান আয়োজনে টাকা দিয়ে নতুন করে আলোচনায় আসে ইসলামী ব্যাংক।
ব্যাংকটির মালিকানা কাঠামোয় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে তদন্তাধীন জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
ইসলামী ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান আবু নাসের মোহাম্মদ আব্দুজ জাহের মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রাম এলাকায় আল বদর বাহিনীর নেতা ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
যুদ্ধাপরাধের জন্য বিচারাধীন জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাশেম আলী ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির এই সদস্য ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশনের সদস্য (প্রশাসন)।
ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আব্দুল হান্নানও জামায়াতে ইসলামীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।
ব্যাংকটির সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. সালেহ হলেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে জামায়াতের সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহেরের ভাই।
ইসলামী ব্যাংকের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, এর ১৯ জন্য দেশীয় ‘স্পন্সরের’ মধ্যে আট জন মৃত। তাদের উত্তরসূরি কারা বা তারা কী করেন- সে বিষয়ে কোনো তথ্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষ প্রকাশ করেনি।