তিন জেলায় দুই গৃহবধূ, এক ছাত্রীর লাশ উদ্ধার

সিরাজগঞ্জ, বরগুনা ও নীলফামারী থেকে দুই গৃহবধূ ও পঞ্চম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

জেলা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2014, 12:29 PM
Updated : 19 April 2014, 12:29 PM

শনিবার সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, নীলফামারীর ডিমলা এবং শুক্রবার গভীর রাতে বরগুনার তালতলী উপজেলায় এ তিন লাশ উদ্ধার হয়। 

সিরাজগঞ্জ

কাজিপুর উপজেলার পরানপুর গ্রামে শ্বাসরোধে গৃহবধূ আলেয়া খাতুনকে (৩৭) তার স্বামী হত্যা করে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় আলেয়ার স্বামী সোহরাব হোসেন ও তার কথিত প্রেমিকা মর্জিনা খাতুনকে আটক করেছে পুলিশ।

কাজিপুর থানার ওসি আব্দুল জলিল জানান, সোহরাবের সঙ্গে একই গ্রামের এক গৃহবধূর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে।

শনিবার ভোরে আলেয়া বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে সোহরাব তাকে মারধর করে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর গলায় রশি পেছিয়ে লাশ ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যান।

সকালে এলাকাবাসী তা দেখতে পেয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সোহরাব ও তার প্রেমিকা মর্জিনা খাতুনকে আটক করে।

ওসি জানান, এ ব্যাপারে কাজীপুর থানায় মামলা হয়েছে।

বরগুনা

যৌতুকের জন্য গৃহবধূ হনুফা বেগমকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে শনিবার শ্বশুর-শাশুড়িসহ চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে তালতলী থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তাররা হচ্ছেন হনুফার শ্বশুর আবদুল মজিদ ফকির, শাশুড়ি হালিমা বেগম, চাচাত দেবর খলিল ফকির ও জলিল ফকির।

নিহত হনুফা তালতলী উপজেলার কবিরাজ পাড়া গ্রামের রফেজ উদ্দিন হাওলাদারের মেয়ে এবং বরগুনা সদরের আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের আলামিনের স্ত্রী।

তালতলী থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, শুক্রবার রাতে তারা হনুফার বাবার বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার ও তার শ্বশুর-শাশুড়িসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছেন।

তিনি আরো জানান, নিহতের শরীরে নির্যাতনের অসংখ্য ক্ষতচিহ্ন রয়েছে।

দুপুরে এ ঘটনায় বরগুনা সদর থানায় হনুফার বাবা রফেজ উদ্দিন হাওলাদার একটি হত্যা মামলা করেছেন বলে জানান তিনি।

রফেজ উদ্দিন হাওলাদার জানান, দেড় বছর আগে হনুফার সঙ্গে পাতাকাটা ইউনিয়নের লেমুয়া গ্রামের মজিদ ফকিরের ছেলে আলামিনের বিয়ে হয়েছিল।

বিয়ের পর থেকে মাদকাসক্ত ট্রাকচালক আলামিন স্ত্রী হনুফাকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করত। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে এক মাস আগে হনুফা বাবার বাড়ি চলে আসে।

১৫ দিন আগে আলামিন নির্যাতন না করার শর্তে হনুফাকে তার বাড়ি নিয়ে যায় বলে জানান তিনি।

গত রোববার (১৩ এপ্রিল) হনুফাকে পুনরায় নির্যাতন করে অজ্ঞান অবস্থায় বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি না করে বরিশাল নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়।

অজ্ঞান অবস্থায় তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও আর জ্ঞান ফেরেনি।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় হনুফা।

শুক্রবার হনুফার লাশ তার বাবার বাড়িতে নিয়ে যায় তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করে লাশ দাফনের চেষ্টা চালায় তারা।

নীলফামারী

ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের সুন্দরখাতা গ্রামের একটি ভূট্টাক্ষেত থেকে শনিবার দুপুরে মিনি আক্তারের (১২) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মিনি ওই ইউনিয়নের সুন্দরখাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চশ শ্রেণির ছাত্রী ও একই গ্রামের মৃত আব্বাস আলীর মেয়ে।

এদিকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে মিনির চাচাত ভাই আশরাফুল হক (১৯) ও একই এলাকার মজিবর রহমানের ছেলে রিপনকে (১৭) আটক করেছে পুলিশ।

ডিমলা থানার ওসি শওকত আলী জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিকাল ৪টার দিকে তাদের আটক করা হয়েছে।

ওসি প্রত্যক্ষর্দশীদের বরাদ দিয়ে জানান, দুপুরে গ্রামের একটি ভূট্টাক্ষেতে শিশুটির লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয় এলাকাবাসী।

পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠায়।

ওসি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে শিশুটিকে কেউ ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে যায়।