রিজওয়ানার দাবি, স্বামীকে অপহরণ তার কারণেই

পরিবেশ আন্দোলনের সংগঠক রিজওয়ানা হাসান দাবি করেছেন, তার পেশাগত কাজে ক্ষিপ্ত হয়ে কেউ তার স্বামীকে অপহরণ করেছে।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 April 2014, 02:18 PM
Updated : 16 April 2014, 05:34 PM

বুধবার বেলা ৩টার দিকে স্বামী আবু বকর সিদ্দিক (এ বি সিদ্দিক) অপহৃত হওয়ার খবর পেয়েই নারায়ণগঞ্জে যান পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) নির্বাহী পরিচালক।

যেখান থেকে এ বি সিদ্দিককে অস্ত্রের মুখে তুলে নেয়া হয়, ফতুল্লা থানার ভুইগড় এলাকায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রিজওয়ানা, সেখানে পুলিশ কর্মকর্তারাও ছিলেন।

তিনি বলেন, “আমার জানা মতে, তার (সিদ্দিক) কোনো শত্রু নেই। আমাদের এমন কোনো টাকা-পয়সাও নেই যে, কেউ অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করতে পারে।

“আমার পেশাগত কর্মকাণ্ডে বসুন্ধরা, মধুমতি, আশিয়ান, শিপ ব্রেকারসহ কিছু ব্যক্তি-গোষ্ঠি চরমভাবে ক্ষুব্ধ। তারাই হয়ত পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামীকে অপহরণ করেছে।”

ম্যাগসেসে পুরস্কারজয়ী রিজওয়ানা পরিবেশ ধ্বংসের বিভিন্ন কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সক্রিয়, এই ধরনের অনেক মামলায় আইনি লড়াইও চালাচ্ছেন তিনি।

রিজওয়ানার স্বামী এ বি সিদ্দিকের বেড়ে ওঠা নারায়ণগঞ্জে। তিনি ফতুল্লা পোস্ট অফিসে মোড়ের হামিদ ফ্যাশন লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক। এই প্রতিষ্ঠানটির মালিক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।

জাতীয় শ্রমিক লীগের ফতুল্লা আঞ্চলিক শাখার সভাপতি কাউসার আহম্মেদ পলাশের নেতৃত্বে শ্রমিক বিক্ষোভের মুখে হামিদ ফ্যাশনস কয়েক বছর বন্ধ ছিল।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে এই কারখানা পরিচালনার দায়িত্ব নেন এ বি সিদ্দিক। তার আগে নারায়ণগঞ্জের সাবেক সংসদ মোহাম্মদ আলীর প্রতিষ্ঠানে ছিলেন তিনি।

রিজওয়ানা ঘটনাস্থলে উপস্থিত নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপারকে অনুরোধ করেন, “আপনারা যদি নারায়ণগঞ্জের টর্চার সেলগুলোতে অভিযান চালান, তাহলে হয়ত ওর (সিদ্দিক) খবর পাওয়া যেতে পারে।”

তখন পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, “টর্চার সেলগুলো তো র‌্যাব অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে।”

এ বি সিদ্দিক তার প্রাইভেটকারে চালক রিপনকে নিয়ে ঢাকায় ফিরছিলেন। ভুইগড় এলাকায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাশে ভূঁইয়া ফিলিং স্টেশনের সামনে তাকে তুলে নেয় অস্ত্রধারীরা।

“আমি আমার স্বামীকে সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরত চাই,” বলেন রিজওয়ানা।

পুলিশ সুপার নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, অপহরণের পরপরই তারা তৎপরতা শুরু করেছেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কসহ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন সড়কে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চলছে।

এ বি সিদ্দিককে উদ্ধারে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ৪টি টিম, ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ যৌথভাবে কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যান্য বাহিনীর সহযোগিতাও নেয়া হচ্ছে।

অপহরণস্থল থেকে রিজওয়ানা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শহীদুল ইসলামের গাড়িতে চড়ে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যান।

সেখানে পৌঁছার পর তিনি পুলিশপ্রধান হাসান মাহমুদ খন্দকারসহ র‌্যাবের কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে টেলিফোন করে স্বামীকে উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান।

রিজওয়ানা এই ঘটনায় একটি মামলা করেছেন বলে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আকতার হোসেন জানিয়েছেন।