বুধবার হাসপাতালের বহির্বিভাগসহ কয়েকটি ইউনিটের সামনে অপেক্ষারত রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্যই পাওয়া গেল। কেউ কেউ প্রকাশ করলেন ক্ষোভ, জানালেন অসহায়ত্বের কথা।
দুর্ভোগ যাই হোক, দোষী ব্যক্তির শাস্তির দাবিতে অনড় চিকিৎসকরা। সকালে সংবাদ সম্মেলন করে সেই কথাই বলেছেন তারা। আন্দোলনরত চিকিৎসকদের পক্ষে ডা. আহমেদ সালাম মীর বলেন, হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, আইসিইউ, সিসিইউ এবং পূর্বে ভর্তিকৃত রোগীদের সেবা অব্যাহত রয়েছে।
ওই সংবাদ সম্মেলনেই কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা আসে।
ডা. আহমেদ সালাম মীর বলেন, “আমরা চিকিৎসকার কর্মবিরতি পালন করতে চাই না। রোগীদের সেবা দিতে চাই। কিন্তু নিজেরা নিরাপত্তাহীনতায় থেকে চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব নয়।”
সংবাদ সম্মেলনের পর বেলা সোয়া ১২টা থেকে প্রায় আধাঘণ্টা শাহবাগ চৌরাস্তায় সড়ক অবরোধও করেন চিকিৎসকরা।
চিকিৎসকরা আগে ভর্তি হওয়া রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার কথা বললেও বাস্তবে এর প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অনেক নতুন রোগীকেও সেবা না পেয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে এদিন।
বারডেমের বারান্দায় চেয়ারে মাথায় হাত দিয়ে বসে ছিলেন তোফাজ্জল হোসেন (৫৫)। কুড়িগ্রাম থেকে এসছেন তার ডায়াবেটিস আক্রান্ত অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে।
তিনি বলেন, “সকাল ৯টার দিকে হাসাপাতালে পৌঁছার পর থেকে চিকিৎসককে দেখানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু কাউকেই পাচ্ছেন না। এমনকি কেউ আমাকে জানাচ্ছেও না কতদিন পর দেখা করতে পারবো।”
তোফাজ্জল বলেন, “আমরা দুই মাস আগে এসে একবার চিকিৎসা নিয়েছি। ডাক্তার আবার আমাদের আসতে বলেছিলেন। কিন্তু এখন ডাক্তারকে পাচ্ছি না। এই বৃদ্ধ বয়সে এতা দূর থেকে বাসে আসতেও অনেক কষ্ট হয়। আবার ঢাকা শহরে বাসাভাড়া নিয়ে থাকার মতোও অবস্থা নেই।”
পটুয়াখালী থেকে এসেছেন মো. ইউসুফ আলী। তাকে হাসপাতালের বহির্বিভাগের ঘুরোঘুরি করতে দেখা গেল। শুধু তোফাজ্জল বা ইউসুফ নন, এমন অনেকেই ভোগান্তিতে পড়েছেন কর্মবিরতির কারণে।
৩৫বছর বয়সী ডায়বেটিস আক্রান্ত আজিজ হাওলাদার বললেন, “দুইদিন থেকে ডাক্তার দেখানোর জন্য ঘুরতেছি। কাল আইসা দেখি হাসপাতাল বন্ধ। আজকাল তাই দেখতেছি। কবে খুলবে তাও কেই বলছে না। জিঙ্গাসা করলে কয় টিভি দেখে আসেন।”
ডাক্তাররা কেন রোগী দেখছে না এর কারণ জানেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তাদের তো কোন দয়া-মায়া নাই। না দেখলে কারো কিছু করার আছে।”
জামালপুর থেকে আসা মো. ইউসুফ গাজী জানালেন, তিনি পুরাতন রোগী হলেও চিকিৎসক দেখাতে পারছেন না। সেখানকার কর্মীরা পববর্তীতে টেলিভিশনে খবর দেখে ফের আসার পরামর্শ দিয়েছেন।