বুঝতে পারলে জুতা পায়ে উঠতাম না: স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

পুরো শহীদ মিনার ঢেকে মঞ্চ তৈরি করায় বুঝতে না পেরে জুতা পায়ে উঠেছিলেন বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

কামাল তালুকদারবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 April 2014, 05:11 PM
Updated : 15 April 2014, 05:34 PM

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে জুতা পায়ে শহীদ মিনারে ওঠার ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে একথা বলেন।

সরাইল উপজেলা সদরে পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শহীদ মিনারকে প্যান্ডেলে ঢেকে একটি বৃত্তি প্রদানের অনুষ্ঠানের মঞ্চ তৈরি করা হয়।

ঢাকার আয়েশা মেমোরিয়াল স্পেশালাইজড হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রীসহ অতিথিরা জুতা পায়েই মঞ্চে ওঠেন।

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, “সেখানে যে শহীদ মিনার রয়েছে, তা তো আমি বুঝতে পারিনি। আর আয়োজকরাও কেউ আমাকে তা বলেনি। জানলে তো আমি কখনোই জুতা পায়ে উঠতাম না, অবশ্যই জুতা খুলে উঠতাম।”

ভাষাশহীদদের প্রতি অশ্রদ্ধা জানানোর মতো কোনো কাজ করার অভিপ্রায় ছিল না বলে জানান আসাদুজ্জামান। অনভিপ্রেত এই ঘটনার জন্য আয়োজকদেরই দায়ী করেছেন তিনি।  

এই বিষয়ে অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লিয়াজোঁ কর্মকর্তা সঞ্জীব ভট্টাচার্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটি ভুল হয়ে গেছে। এখন তো আর কিছু করার নেই।”

প্রীতি চক্রবর্ত্তীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

আশুতোষ চক্রবর্ত্তী স্মারক বৃত্তি দেয়ার এই অনুষ্ঠানে শহীদ মিনারের তিনটি স্তম্ভকে চাদর দিয়ে আড়াল করে বেদিতে অতিথিদের বসার মঞ্চ করা হয়। সামনে ছিল দর্শকদের বসার স্থান।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন প্রধান অতিথি। স্থানীয় সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন, পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বন্দীপ কুমার সিংহ রায়, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর ছিলেন অনুষ্ঠানে।

জুতা পায়ে ওঠার বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “এটি যে শহীদ মিনার, তা আমাদের জানা ছিল না।”

অনুষ্ঠানস্থলে এসে শহীদ মিনারে মঞ্চ দেখে অনেকেই অবাক হন। বিস্ময় প্রকাশ করে ওই বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীও।

নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা এতদিন জানতাম শহীদ মিনারে জুতা নিয়ে উঠতে নেই, এটি শ্রদ্ধার জায়গা। কিন্তু আজ দেখলাম শহীদ মিনারে জুতা নিয়ে উঠেছেন অতিথিরা।”

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আইয়ূব খানের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি ‘ব্যস্ত’ আছেন জানিয়ে ফোন রেখে দেন।