৪৭ শতাংশ সমবায় সমিতি অকার্যকর: টিআইবি

অনিয়ম, তদারকির অভাবে দেশের নিবন্ধিত সমবায় সমিতির ৪৭ শতাংশ অকার্যকর হয়ে আছে বলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) গবেষণায় উঠে এসেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 April 2014, 10:14 AM
Updated : 15 April 2014, 10:14 AM

মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে দুর্নীতিবিরোধী এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল বলেছেন, কার্যকর নিরীক্ষার মাধ্যমে সমবায় সমিতিগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় এনে জনপ্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটাতে হবে।

“সমবায়ের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও এ দেশে ঐতিহ্য রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে যথাযথ নিরীক্ষার অভাবে অবহেলিত এ খাতটি দুর্নীতি ও অনিয়মগ্রস্ত। এখনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নজর দিতে হবে।”

সমবায় খাতের দুর্বলতার দিকগুলো বিশ্লেষণ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান নিবন্ধনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাবকে দায়ী করেন।  

তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও রাজনৈতিক বা প্রভাবশালীদের নির্দেশে সমিতির নিবন্ধন এবং প্রাথমিক সমবায় সমিতি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়মবহির্ভূতভাবে আদায় করা হয়। আবার এলাকাভেদে এ অর্থের পরিমাণ ৩৫ হাজার টাকা থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়।

‘সমবায় সমিতি ব্যবস্থাপনা : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক টিআইবির এই গবেষণায় ছয় বিভাগের ৮টি জেলার ১১ উপজেলার ৩৭টি সমবায় সমিতির তথ্য সংগ্রহ করে।

২১টি বহুমুখী এবং সঞ্চয় ও ঋণদান সমিতি আনুমানিক ৯ লাখ সদস্য ও গ্রাহকের বিনিয়োগকৃত প্রায় ৯ হাজার ৭০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

বাংলাদেশে বর্তমানে ২৯ ধরনের নিবন্ধিত সমবায় সমিতির সংখ্যা ১ লাখ ৮৬ হাজার ১৯৯টি। এর সদস্য সংখ্যা ৯৩ লাখ ৪৯ হাজার ৫৫৭ জন। এতে কর্মসংস্থান হয়েছে ৪ লাখ ৪২ হাজার ১৯২ জনের। মূলধন রয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা, সম্পদ প্রায় ৬ হাজার ২৩৭ কোটি টাকা। জিডিপিতে সমবায়ের অবদান ১ দশমিক ৮৮ শতাংশ।

টিআইবি গবেষণায় সমবায়ে অনিয়মের যে ক্ষেত্রগুলো উঠে এসেছে, সেগুলো হল- নিবন্ধনের শর্তাবলি মাঠপর্যায়ে যাচাই না করেই নিবন্ধন দেয়া, যথাযথ নিরীক্ষা সম্পাদন না করা, সমবায় সমিতির সঙ্গে আর্থিক চুক্তিতে সমিতির হিসাব প্রস্তুত করে দেয়া, বিতরণকৃত ঋণের বিপরীতে আইন বহির্ভূতভাবে ৩০-৪৫ শতাংশ সুদ আদায়, নিরীক্ষার সময় প্রকৃত লাভ গোপন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সমিতি গঠন এবং সমিতিকে কর ফাঁকি কালো টাকা বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার।

সার্বিক বিষয়ে টিআইবির সুপারিশ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ সরকারের কাছে উপস্থাপন করা হবে বলে জানান  ইফতেখারুজ্জামান।