২৪ এপ্রিলের মধ্যে ক্ষতিপূরণ চায় রানা প্লাজায় ক্ষতিগ্রস্তরা

আগামী ২৪ এপ্রিলের মধ্যে রানা প্লাজা ধ্বসে হতাহত ও নিখোঁজ শ্রমিকদের জন্য ক্ষতিপূরণ পরিশোধের দাবি জানিয়েছে তৈরি পোশাক শ্রমিকদের একটি সংগঠন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 April 2014, 10:54 AM
Updated : 12 April 2014, 10:54 AM

শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানায় জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন।

মানববন্ধনে রানা প্লাজা ধ্বসে ও তাজরিন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের পরিবারের সদস্য ও ক্ষতিগ্রস্তরা উপস্থিত ছিলেন।

সংগঠনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন বলেন, আইএলও’র তত্ত্বাবধানে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের জন্য গঠিত রানা প্লাজা কমপেনজেশন অ্যারেঞ্জমেন্ট কো-অর্ডিনেটিং কমিটির হিসাবে সবার ক্ষতিপূরণের জন্য চার কোটি ডলারের প্রয়োজন হলেও বিদেশি ক্রেতারা মাত্র এক কোটি ৭০ লাখ ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

“এটা শুধু হতাশাজনকই নয়, লজ্জাজনকও। ক্ষতিগ্রস্তরা এখানে ভিক্ষা চাচ্ছে না, তাদের দাবি অত্যন্ত ন্যায়সঙ্গত। আগামী ২৪ এপ্রিলের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের গ্রহণযোগ্য ও সম্মানজনক ক্ষতিপুররন দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।”

গত বছরের ২৪ এপ্রিল সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকার নয় তলা রানা প্লাজা ধসে নিহত হন এক হাজার ১৩১ জন, যাদের বেশিরভাগই তৈরি পোশাক কারখানার কর্মী। আহত হয়েছেন আরো কয়েক হাজার শ্রমিক এবং ঘটনার পর বছর পেরুলেও এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে।

এর আগে ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তুবা গ্রুপের তৈরি পোশাক কারখানা তাজরিন ফ্যাশনসে অগ্নিদগ্ধ হয়ে সরকারের হিসাবে ১১০ জনের মৃত্যু হয়।

মানববন্ধনে রানা প্লাজা ধ্বসে নিখোঁজ শ্রমিক সুলাইমান হোসেনের বোন স্বপ্না আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এভাবে আর কতদিন দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াবো। আমরা তো ভিক্ষা চাচ্ছি না, আমাদের দাবি ন্যায়সঙ্গত।”

ভাইয়ের জন্য কোনো ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “না আমাদের কেউ কোনো ক্ষতিপূরণ দেয়নি।”

মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনায় নিজের দু’ছেলেকে হারান সেসময় রানা প্লাজার দারোয়ান হিসেবে কর্মকরত হাবিবুর রহমান। তার এক ছেলে এখনো নিখোঁজ রয়েছে।

তিনি বলেন, “বড় ছেলে সেন্টুর অর্ধেক দেহ ঘটনার ১৬ দিন পরে পেয়েছি। কিন্তু মেঝ ছেলে সেকান্দারের লাশ এখনো পাইনি, এমনকি কোনো ক্ষতিপূরণও পাইনি।” 

রানা প্লাজা ধ্বসের পরপরই বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের নিরাপত্তার অভাবের বিষয়টি নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনার ঝড় তুলে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), বিদেশি ক্রেতা ও দেশের পোশাক মালিকদের সংগঠনের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণের উদ্যোগ নেওয়া হলে অনেকেই ক্ষতিপূরণ পায়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।