হাইটেক পার্কের ঋণ জোগাড়ের ভার নিলেন জয়

কঠিন শর্তে বিশ্ব ব্যাংকের মতো ঋণদাতা সংস্থা থেকে অর্থ নেয়ার বিরোধিতা করলেন প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 March 2014, 02:24 PM
Updated : 11 March 2014, 03:57 PM

গাজীপুরে হাই টেক পার্কে বিদেশি ঋণ না পাওয়া গেলে নিজেই প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড় করে দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এই তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ।

মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ে বিসিসি ভবনের আইসিটি বিভাগের সম্মেলন কক্ষে ই-ফাইলিং সিস্টেম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন জয়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্যে গাজীপুরের কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নের বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি এই সংস্থাটির শর্তের বেড়াজাল নিয়ে আপত্তি তোলেন।   

“দেশ আমাদের, আমরা যা করতে চাইব, তাই হবে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক যা চাইবে, তা হবে না, তারা টাকা দিয়ে হুকুম দিতে চায়, এটা হবে না।”

গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এটা ফকিরের দেশ না। আমরা নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছি।”

বাংলাদেশকে স্বনির্ভর করার কথা তার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলে আসছেন। পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে জটিলতার প্রেক্ষাপটে এই সংস্থাটি সংস্কারের দাবিও জাতিসংঘে তোলেন তিনি। 

জয় বলেন, “ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ঋণ দেয়, আমরা তা শোধ করি। ওই ঋণ মাগনা দেয় না।”

হাইটেক প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ না এলে নিজে তৎপর হবেন জানিয়ে তিনি বলেন, “ঋণ না দিলে প্রব্লেম নাই। আমি আপনাদের টাকা জোগাড় করে দেব।”

হাইটেক পার্ক সংলগ্ন রেল স্টেশন রাখার গুরুত্ব তুলে ধরে জয় আরো বলেন, “হাইটেক পার্কে হাইটেক ফ্যাক্টরি চাই না, সেখানে হবে সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রি, ক্লিলড লেবার গড়ে তুলতে হবে। সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রি দাঁড় করাতে আলাদাভাবে খরচ করতে চাই।”

হাইটেক পার্ক পরিদর্শনে বুধবার কালিয়াকৈর যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীপুত্র। সেখানে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবেন বলে জানান তিনি।

আগামী ৫ বছরে তথ্য ও প্রযুক্তি খাতকে দাঁড় করানোর পরিকল্পনা নিয়ে এগোনোর কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জয়।

“৫ বছর আগে যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলা হয়েছিল তখন কেউ কল্পনা করতে পারেনি কী হবে। কিন্তু  ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্র, ডেটা সেন্টার, মোবাইল ব্যাংকিং এবং ক্রয় বিক্রয়সহ অন্যান্য সেবা শুরু হয়ে গেছে।”

ফাইল ছবি

“সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টে এগিয়ে যেতে হবে, ইতোমধ্যে ২০ হাজার আইটি এক্সপার্ট গড়ে তোলার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে।”

আগামী ৫ বছরের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির আশা প্রকাশ করে জয় বলেন, এই খাতে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি করতে পারলে আগামীতে রেমিটেন্স রেমিটেন্স ১৫০০ কোটি ডলারে উন্নীত হবে।

এই অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিটিসিএলের ওপর বিরক্ত জয়

বিভিন্ন প্রকল্পে সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে না পারায় বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) ওপর বিরক্তি প্রকাশ করেন জয়।

অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পে কেবল সংযোগ নিয়ে বিলম্ব ও সময়ক্ষেপণের কথা তুলে ধরা হলে তিনি বলেন, “বিটিসিএলের বিষয়ে আমার কমপ্লেইন আছে, অনেক ক্ষেত্রেই তাদের ক্যাপাবিলিটি নেই।

“শুধু বিটিসিএলের ওপর নির্ভর না হয়ে বেসরকারি দুটি এনটিটিএন ( ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন্স ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক) কে কাজ দেয়া যেতে পারে।”

“বিটিসিএল সরকারি প্রতিষ্ঠান, হয়ত তাদের খরচ কম, খরচ কমাতে যদি কানেকশনই না পাই, তাহলে কী লাভ,” বলেন তিনি।