যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনায় আশরাফ

একাত্তরে বাঙালির মুক্তির সংগ্রামের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ মুখপাত্র সৈয়দ আশরাফ বলেছেন, আমেরিকা যদি সেদিন তাদের কাজ করতে পারতো, তাহলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন কঠিন হয়ে যেত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Dec 2013, 04:03 PM
Updated : 21 Dec 2013, 04:03 PM

শনিবার বিজয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

আশরাফ বলেন, “১৯৭১ সালেও আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা হয়েছিল। সে সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন নিক্সন। তিনি ভারত মহাসাগরে সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিলেন। আমেরিকা যদি সেদিন তাদের কাজ করতে পারতো, তাহলে আমাদের দেশ অর্জন কঠিন ছিল।

“কারো দয়ায় আমাদের স্বাধীনতা হয়নি। আমাদের ভয় পেলে চলবে না। আমাদের নেতৃত্বে আছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। যার বাবার নেতৃত্বে আমরা এই দেশকে স্বাধীন করেছিলাম। দেশের সবচেয়ে পুরাতন রাজনৈতিক দল আমাদের দল। কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসা ও সমর্থন রয়েছে এই দলের প্রতি।”

“আমরা দেশের কোন শত্রুকে ভয় পাই না। বিদেশের কোন শত্রুকেও ভয় পাই না।”

দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানে সংবাদপত্রের বস্তুনিষ্ঠতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন আশরাফ। 

তিনি বলেন, “বস্তুনিষ্ঠতা ঘাটতি থাকায় দেশের সংবাদপত্র শিল্প মানুষের আস্থা হারাচ্ছে। এখন সংবাদপত্রে অনেকে কলাম লেখেন। তাদের তাপমাত্রা বুঝতে গায়ে হাত দিতে হয় না। কলাম পড়লেই বোঝা যায়। সংবাদ হতে হবে বস্তুনিষ্ঠ। সংবাদ অনুমান নির্ভর হতে পারে না। এর ফলে আমাদের সংবাদপত্র শিল্প মানুষের আস্থা হারাচ্ছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য সুখবর নয়।”

অনুষ্ঠানে আশরাফ টিভি টকশোরও কড়া সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন, “টেলিভিশন চ্যানেলে আরেকটা বিষয় আছে- টকশো। এটা ইংরেজি ‘টক’, না তেঁতুল ‘টক’? শুনলে মনে হয়, এরা শুধু বাংলা নয়, বিশ্ব জয় করে এসেছেন।

“বাচ্চা হলে কীভাবে পরিচর্যা করতে হবে, কীভাবে গোসল করাতে হবে সেই অনুষ্ঠানে যিনি থাকেন। তিনিই আবার রাজনৈতিক অনুষ্ঠানেও থাকেন। টেলিভিশন চ্যানেল ঘুরালেই এটা দেখা যায়। এ ধরনের গণমাধ্যম গণতন্ত্রের জন্য দুর্ভাগ্যজনক।”

বাংলাদেশে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর নিয়ে কয়েকটি দেশের প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “স্বাধীন. নিরপেক্ষ, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যম ছাড়া কোন দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। গণতন্ত্র স্থায়ী শিকড় গাড়তে পারে না।”

“সংবাদ মাধ্যমে খবর বেরিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর ৪০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। তাদের দেশের এখনো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর আছে। আপনাদের দেশে মৃত্যুদণ্ড হলে সমস্যা নাই। আমাদের দেশে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড হলে সাতখণ্ড রামায়ণ অশুদ্ধ হয়ে যায়।”

“কেবল বিচারের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডই (জুডিশিয়াল অক্সিকিউশন) নয়, ড্রোন হামলার মাধ্যমেও মানুষকে মারা হচ্ছে। সাদ্দাম হোসেনকে এমনভাবে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে, তার মাথা দেহ থেকে আলাদা হয়ে গেছে। ঈদের দিনে এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।”

“বিনা ওয়ারেন্টে লাদেনকে হত্যা করা হলো, তার লাশটা পর্যন্ত দাফন করতে দেয়া হলো না। এটা কোন ধরনের সিভিলাইজড কিলিং?”