ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাত ১০টা ১ মিনিটে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর কড়া পাহারায় ভোররাতের মধ্যেই লাশ নিয়ে যাওয়া হয় ফরিদপুরের সদর উপজেলার ভাষানপুর ইউনিয়নের আমিরাবাদে তার গ্রামের বাড়িতে।
সেখানে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় কাদের মোল্লাকে, একাত্তরের নৃশংসতার জন্য যিনি প্রথম ফাঁসিকাষ্ঠে উঠলেন।
মঙ্গলবার সব প্রস্তুতি নিয়ে শেষ মুহূর্তে জামায়াত নেতার আইনজীবীদের আবেদনে আদালতের স্থগিতাদেশ আসায় আটকে যায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর। তাই বৃহস্পতিবার সরকারের পক্ষ থেকে আগাম কোনো ঘোষণা দেয়া হয়নি, যদিও প্রস্তুতি দেখে দণ্ড কার্যকরের আভাস মিলছিল।
এই যুদ্ধাপরাধীকে ফাঁসিতে ঝোলানোর প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা পর রাত সোয়া ১১টার দিকে কারাগার থেকে র্যাব-পুলিশ-বিজিবির পাহারায় অ্যাম্বুলেন্স বের হয়, বোঝা যায় এর একটিতে রয়েছে লাশ।
রাত ৪টার দিকে ফরিদুপরের আমিরাবাদ গ্রামে লাশ পৌঁছানোর পর জানাজা শেষে লাশ দাফন করা হয়।
এই কাজের তদারককারী ফরিদপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মামুন শিবলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঠিকঠাকভাবেই সব আনুষ্ঠানিকতা সারার পর দাফনকাজ সম্পন্ন হয়েছে।”
মাওয়া পেরিয়ে রাত ২টার দিকে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ফেরি কলমীলতা মাদারীপুরের শিবচরের কাওড়াকান্দি ঘাটে পৌঁছলে সেখান থেকে বহরের সঙ্গে ছিলেন মামুন শিবলী।
ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার পর কাদের মোল্লার লাশ দাফনের প্রস্তুতি চলছিল। পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হবে বলে কাদের মোল্লার ছোটভাই মোল্লা মাঈনউদ্দিন আহমেদ আগেই জানিয়েছিলেন।
ভাষানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাঈনুদ্দিন রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “তার (কাদের মোল্লা) শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মা ও বাবার কবরের পাশে দাফন করা হবে।”
সদরপুরের ইউএনও লোকমান হোসেন কবর খোঁড়াসহ আনুষঙ্গিক কাজ তদারক করতে আগেই ওই বাড়িতে যান, সঙ্গে ছিল পুলিশও।
ফাঁসির তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মাঈনুদ্দিন বলেন, “আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে রেখেছি, আল্লাহ যা করেছেন ভাল করেছেন। এছাড়া আমাদের আর কিছু বলার নাই।”
রাত সোয়া ১১টার দিকে কারাগার থেকে অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে র্যাব-পুলিশ-বিজিবির ১৪টি গাড়ি বেরিয়ে আসে কাদের মোল্লার লাশ নিয়ে।
কীভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে- তা জানতে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ের অপেক্ষায় সাংবাদিকরা থাকলেও তা হবে না বলে কারা কর্মকর্তারা জানিয়ে দেন।
ডেপুটি জেলার নূর মোহাম্মদ রাত পৌনে ১২টার দিকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “কারা কর্তৃপক্ষ কারা বিধি অনুযায়ী চলে। বিধি অনুযায়ী গণমাধ্যমের সামনে কারা কর্তৃপক্ষের সংবাদ সম্মেলনের কোনো নিয়ম নেই। এ জন্য আমরা কোনো ব্রিফিং করব না।”
কেরানীগঞ্জ হয়ে রাত সোয়া ১২টায় মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় ২ নম্বর ঘাট দিয়ে কাদের মোল্লার লাশের গাড়ি ফেরি ‘কলমীতলা’য় ওঠে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন।
১০টি গাড়ি নিয়ে ওই ফেরি রাত সাড়ে ১২টায় ওপারে মাদারীপুরের কাওড়াকান্দির পথে রওনা হয়। ওই সময় ঘাটে দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন ছিল।
ফেরির কর্মী ছাড়া আর কাউকে তখন ভিড়তে দেয়া হয়নি। নদীতে ফেরির আশপাশেও স্পিডবোটেও পুলিশের টহল ছিল।
প্রথমে ‘কনকচাপা ’ ফেরিতে এই অ্যাম্বুলেন্স পারাপারের কথা থাকলেও পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয় বলে বলে লৌহজংয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. খালেকুজ্জামান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “কনকচাপা ফেরিটি তৈরি রাখা হলেও নানা কারণে প্রায় একই রকম অপেক্ষাকৃত নতুন ফেরি কলমীলতাকে নির্বাচন করা হয়।”
রাত সাড়ে ১২টায় ফেরি ছাড়ার পর ঘাট এলাকায় নিরাপত্তা বেষ্টনি শিথিল করা হয়। পদ্মা নদী পেরিয়ে মাদারীপুরের কাওড়াকান্দি ঘাটে পৌঁছলে লাশের দায়িত্ব নেন ফরিদপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মামুন শিবলী, দাফন পর্যন্ত তিনি ছিলেন।
কারাপ্রস্তুতিতে ফাঁসির আভাস
সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যরা কাদের মোল্লার সঙ্গে দেখা করে আসার পর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় নিরাপত্তা ক্রমেই বাড়তে থাকলে মঙ্গলবারের আবহ খুঁজে পাওয়া যায়।
গত মঙ্গলবার আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু ওই রাতের মধ্যেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কথা বলেছিলেন। পরে চেম্বার বিচারপতির এক আদেশে তা আটকে যায়।
রিভিউ আবেদন খারিজের পর সেদিনের মতো বৃহস্পতিবারও আইন উপদেষ্টা শফিক আহমেদের উপস্থিতিতে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের এক বৈঠক হয়। তবে সেদিনের মতো এদিন কোনো কর্মকর্তাই মুখে খোলেননি।
সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় কাদের মোল্লার স্বজনরা দেখা করে আসার পর তার আইনজীবীরা দেখা করার আবেদন নিয়ে গিয়েছিলেন কারা কর্তৃপক্ষের কাছে।
তবে তা নাকচ করা হয় বলে কাদের মোল্লার আইনজীবী তাজুল ইসলাম জানান। তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের এক জুনিয়র আইনজীবী আজিমুদ্দিন পাটওয়ারি আবেদনটি নিয়ে কারাগারে যান। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ ওই আবেদন নাকচ করে দিয়ে বলেছে, এখন আর দেখা করা সম্ভব নয়।”
রাত পৌনে ৯টার দিকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে র্যাব-পুলিশের তিন শতাধিক সদস্যের অবস্থান দেখা যায়, যা পরে আরো বাড়তে থাকে।
কারাগারের সামনে অনেক মানুষের উপস্থিতি সন্ধ্যার পর থাকলেও পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে থাকে। বন্ধ করে দেয়া হয় নাজিমউদ্দিন রোডে গাড়ি চলাচলও।
নিয়ম অনুযায়ী, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগে আসামিকে তওবা পড়ানো হয় এবং ফাঁসিতে ঝোলানোর পর পরীক্ষা করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন চিকিৎসক।
সিভিল সার্জন ও মৌলভীকে নিয়ে ঢোকেন ডিআইজি (প্রিজন্স) গোলাম হায়দার, অতিরিক্ত ডিআইজি ইফতেখার আহমেদ ও র্যাব-১০ এর অধিনায়ক ইমরান হোসেন। এর কিছুক্ষণ পর ঢোকেন ঢাকার জেলা প্রশাসক শেখ ইউসুফ হারুনও।
এর মধ্যেই কারাগারের ভেতর থেকে খবর আসে, ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত। শাহজাহানের নেতৃত্বে ছয়জন জল্লাদ ফাঁসিতে ঝোলাবেন কাদের মোল্লাকে। রাত ১০টার কিছু সময় পরই কারা সূত্র জানায়, ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে যুদ্ধাপরাধীকে।
রিভিউ আবেদন খারিজ
মঙ্গলবার রাতে মৃত্যুদণ্ডের ওপর স্থগিতাদেশ আনার পর বুধবার সকালে মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন কাদের মোল্লার আইনজীবীরা। দুদিন শুনানি পর বৃহস্পতিবার দুপুরে আপিল বিভাগ ওই আবেদন খারিজ করে দেয়।
প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারকের আপিল বেঞ্চের এই আদেশের মধ্য দিয়ে একাত্তরের হত্যা, ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াত নেতার প্রাণদণ্ড কার্যকরের আইনি বাধা কাটে।
আদেশের পর রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, “বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে রিভিউ খারিজ করে দেয়ায় রায় কার্যকরে এখন আর কোনো আইনগত বাধা নেই।”
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বলেন, ফাঁসি কার্যকরের ক্ষেত্রে কারা কর্তৃপক্ষ আদেশের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ পর্যন্ত অপেক্ষা করবে বলে তিনি আশা করছেন।
যা কিছুই ঘটুক, তা কারাবিধি অনুযায়ী হতে হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
আপিল বিভাগের আদেশের পরপরই সরকার সমর্থক আইনজীবীদের উচ্ছ্বাস এবং জামায়াত সমর্থক আইনজীবীদের ক্ষোভ প্রকাশ করে মিছিল করতে দেখা যায়।
এক পক্ষ শ্লোগান দেয়- ‘ক তে কাদের মোল্লা, তুই রাজাকার, তুই রাজাকার’। অন্যদিকে জামায়াত সমর্থকদের মিছিল থেকে শ্লোগান দেয়া হয়- ‘কাদের মোল্লার ফাঁসি হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিও হয়।
প্রধান বিচারপতি বলেন, “আপনি রাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল। আপনি বলে দিলেই হবে।”
মাহবুবে আলম বলেন, চেম্বার আদালতের আদেশে অনুলিপি কারাগারে গিয়েছিল। এবার ‘রিভিউ’ খারিজের আদেশের অনুলিপিও যাওয়া প্রয়োজন।
রিভিউ খারিজের সংক্ষিপ্ত আদেশে বিচারকদের স্বাক্ষরের পর বিকালে সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখার মাধ্যমে তা কারাগার, অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দপ্তরে পাঠানো হয়।
স্থগিতাদেশের কারণে ফাঁসি কার্যকরের প্রক্রিয়া যেখানে থেমেছিল, সরকারের নির্দেশনা পেলে সেখান থেকেই তা আবার শুরু করা হবে বলে কারা মহাপরিদর্শক মাইন উদ্দিন খন্দকার আগেই জানিয়েছিলেন।
ধোপে টেকেনি কোনো যুক্তি
সকাল ৯টা ২০ মিনিটে শুনানির শুরুতেই কাদের মোল্লার আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক এই আবেদনের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন।
পরে প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন তাকে মূল আবেদনের শুনানি (অন মেরিট) শুরু করতে বলেন।
এ সময় ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, রিভিউয়ের গ্রহণযোগ্যতার (মেনটেইনেবল কি-না) বিষয়ে আদালত এখনো কোনো আদেশ দেয়নি। তার আগেই মূল রিভিউয়ের শুনানি কীভাবে হবে?
এ পর্যায়ে বিচারক বলেন, “রিভিউ মেনটেইনেবল না- এটা আমরা বলছি না। আপনি যদি বলেন এটা ‘মেনটেইনেবল’, সে বিষয়েও কোনো তর্কে যাচ্ছি না। আপনাকে অন মেরিট শুনানির সুযোগ দিচ্ছি। আপনি গ্রাউন্ড বলেন।”
এরপর ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) বিষয়ে যুক্তি দিতে শুরু করেন কাদের মোল্লার আইনজীবী।
রাজ্জাক বলেন, “মোমেনার সাক্ষ্যে (যে সাক্ষ্যে আপিল বিভাগ ফাঁসির রায় দেয়) অসঙ্গতি রয়েছে। তিনি একেক জায়গায় একেক রকম বক্তব্য দিয়েছেন।... বক্তব্যে অসঙ্গতি থাকলে সাক্ষী বিশ্বাসযোগ্যতা হারায়। বিশ্বাসযোগ্যতা না থাকলে সেই সাক্ষীর সাক্ষ্যের ভিত্তিতে কাউকে সাজা দেয়া যায় না।”
বিচারপতি এসকে সিনহা এ সময় বলেন, “সাক্ষীর বিশ্বাসযোগ্যতা আছে বলেই আমরা গ্রহণ করে শাস্তি দিয়েছি।”
এরপর ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “আপিলের রায়ে ত্রুটি রয়েছে। তার প্রমাণ হচ্ছে বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা ওই সাক্ষীকে পুরোপুরি বিশ্বাস করেননি বলে তিনি তার রায়ে সাক্ষীর অসঙ্গতির কথা তুলে ধরেন।”
এ পর্যায়ে বিচারপতি ওয়াহহাব মিয়া বলেন, “সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে রায় হয়েছে। যাতে চারজন একমত হয়েছেন। সেখানে আমারটা বলা আমার জন্য বিব্রতকর। সংখ্যাগরিষ্ঠতার মতামতই প্রাধান্য পাবে। আমার মতের কথা বলা হলে আমি বিব্রতবোধ করব।”
এরপর ব্যারিস্টার রাজ্জাক বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং ‘সম্পূর্ণ ন্যায়বিচার’ বিষয়ে সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদ তুলে ধরেন।
তিনি ভারতের সুপ্রিম কোর্টের একটি দৃষ্টান্ত দেয়ার সময় বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী জানতে চান, সেখানে কি বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদ রয়েছে?
রাজ্জাক বলেন, ট্রাইব্যুনাল এখতিয়ারবহির্ভূতভাবে কাদের মোল্লার মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছে।
“জেল কোড অনুসারে মুত্যু পরোয়ানা জারি করবে সেই আদালত, যে আদালত মৃত্যুদণ্ড দেয়। কাদের মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আপিল বিভাগ। তাই পরোয়ানাও জারি করবে আপিল বিভাগ।”
বিচারপতি এসকে সিনহা এ সময় বলেন, “আমাদের আদেশটাই কারা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছে ট্রাইব্যুনাল। আমরা বলেছিলাম, ট্রাইব্যুনাল তা জারি করেছে।”
এরপর বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী প্রশ্ন করেন, কারাবিধি কি কোনো আইন?
কারাবিধিই অনুসরণ করতে হবে- রাজ্জাকের এমন বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনও। তিনি বলেন, রায় কার্যকর হবে আইন (ট্রাইব্যুনাল) অনুযায়ী।
এরপর অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সংবিধানের ৪৭ (ক)২ অনুযায়ী কাদের মোল্লার ‘রিভিউ’ করার সুযোগ নেই।
তিনি কোনো প্রতিকার চাইতে পারেন না। ট্রাইব্যুনাল আইনে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির আবেদনের সুযোগ থাকবে না। তবে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে শুনতে পারে। আদালত তেমনভাবে এ আবেদন শোনেননি। কাদের মোল্লার পক্ষ থেকে এ আবেদন করা হয়েছে।
মাঝখানে বেলা ১১টা থেকে আধঘণ্টা বিরতি দিয়ে শুনানি চলে বেলা ১১টা ৫০ পর্যন্ত। সর্বশেষ শুনানিতে আব্দুর রাজ্জাক ‘ন্যায় বিচারের স্বার্থে’ মৃত্যুদণ্ড এবং অন্যান্য দণ্ড পুনর্বিবেচনার দুটি আবেদন মঞ্জুর করার আবেদন জানান।
শুনানি শেষে বিচারকরা এজলাস থেকে নেমে যান। এর মিনিট দশেক পরই ‘রিভিউ আবেদন’ খারিজের আদেশ আসে।
এই শুনানি ঘিরে সকাল থেকেই সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় নেয়া হয় কড়া নিরাপত্তা। আদালতে প্রবেশের প্রতিটি ফটকেই পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা সতর্ক অবস্থান নেন। আদালত প্রাঙ্গণের ভেতরেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পুলিশ ও গোয়েন্দা সদস্যকে দেখা যায়।