মৃত্যুদণ্ডের রায় পর্যালোচনার আবেদন খারিজের পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এই জামায়াত নেতার পরিবারের ১০ সদস্য তার সঙ্গে দেখা করতে যান।
এই জামায়াত নেতার দণ্ড কার্যকরে আর কোনো বাধা না থাকার কথা আইনজীবীরা জানানোর প্রেক্ষাপটে সন্ধ্যা থেকে কারাগারের সামনে নিরাপত্তার কড়াকড়ি দেখা যাচ্ছিল।
এরপর রাত ১০টা ১ মিনিটে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। ভোররাতে ফরিদপুরে গ্রামের বাড়িতে দাফন হয় এই জামায়াত নেতার।
সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে কারাগার থেকে বেরিয়ে কাদের মোল্লার ছেলে হাসান জামিল সাংবাদিকদের বলেন, স্বউদ্যোগেই তারা দেখা করতে চাইলে কারা কর্তৃপক্ষ তাদের অনুমতি দেয়।
কারা কর্তৃপক্ষের চিঠি পেয়ে গত মঙ্গলবার পরিবারের ২৩ সদস্য কাদের মোল্লার সঙ্গে দেখা করে এসেছিলেন। সেদিন দণ্ড কার্যকরের সব প্রস্তুতি থাকলেও আদালতের এক আদেশে তা আটকে যায়।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কারাফটকে হাসান জামিল সাংবাদিকদের বলেন, তার বাবা আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন।
রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়া হচ্ছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়ে সাত দিন পর সিদ্ধান্ত জানাবেন কাদের মোল্লা।
“জেল কোড অনুসারে তিনি মার্সি পিটিশনের জন্য সাত দিনের সময় পান। সাত দিন পরে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন, ক্ষমা চাইবেন কি না। এজন্য তিনি আইনজীবিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছেন।”
গত মঙ্গলবার আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছিলেন, ক্ষমা চাওয়ার আবেদন করতে কাদের মোল্লার কাছে দুই বার কথা বলা হয়, তবে তিনি আবেদন করতে ‘অস্বীকৃতি’ জানিয়েছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বৃহস্পতিবার বলেছেন, কাদের মোল্লার ক্ষমা চাওয়ার আর সুযোগ নেই।
পরিবারের ৯ সদস্যকে নিয়ে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে একটি গাড়িতে করে কারাফটকে যান হাসান জামিল। ওই গাড়িতে তার মা সানোয়ারা জাহান ও চার বোনও ছিলেন।
কাদের মোল্লার চার মেয়ে হলেন- আমানাতুন পারভীন, আমানাতুন লারজীন, আমানাতুন পারলীন ও আমানাতুন নাজনীন।
একাত্তরে খুন-ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত কাদের মোল্লার পরিবারের দাবি, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিচারে’ তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে।
হাসান জামিল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “এটা একটি পলিটিক্যাল কিলিং...উনার প্রতি অবিচার করা হয়েছে।”
সেদিন এই যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি কারা কর্তৃপক্ষ নিলেও আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদেশে তা বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত স্থগিত করা হয়।
এরপর দুদিন ধরে আপিল বিভাগে শুনানির পর রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ হয়ে গেলে দণ্ড কার্যকরে বাধা কাটে। এরপর কাদের মোল্লার স্বজনরা তার সঙ্গে দেখা করতে যান।