চুলার আগুনে দগ্ধকে অবরোধের বলি বানানোর চেষ্টা

চুলার আগুনে দগ্ধ এক নারীকে অবরোধের বলি বানানোর চেষ্টা চালিয়ে পুলিশের কাছে ধরা খেয়েছেন এক ব্যক্তি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Dec 2013, 07:25 PM
Updated : 2 Dec 2013, 07:25 PM

বিরোধী দলের অবরোধের মধ্যে সোমবার দুপুরে অন্তঃসত্ত্বা ওই নারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে আসেন তার স্বামী, যেখানে অবরোধে গাড়িতে দেয়া আগুনে দগ্ধ অনেকে চিকিৎসাধীন।

শিরিন আক্তার (১৯) নামের ওই নারী সকালে রাজধানীর ডেমরা সংলগ্ন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের তারাবো নতুন সেতুর কাছে হিউম্যান হলারে দেয়া আগুনে দগ্ধ হন বলে তার স্বামী মো. শাহীন সাংবাদিকদের বলেছিলেন।

পরে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে, ওই সময় ওই এলাকায় কোনো হিউম্যান হলারে আগুন দেয়া হয়নি। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শাহীন স্বীকার করেন, তার স্ত্রী বাসার চুলার আগুনে দগ্ধ হয়েছেন।  সরকারের সাহায্য পাওয়ার আশায় মিথ্যা বলেছিলেন তিনি।

ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা শিরিন কাচপুরের সিনহা গার্মেন্টের একজন পোশাক শ্রমিক। তার স্বামী শাহিন দিনমজুর। তাদের বাড়ি ভোলায়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শংকর পাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শিরিনের শরীরের ৪০ শতাংশ আগুনে পুড়ে গেছে। তার গর্ভস্থ শিশুটির সমস্যা হচ্ছে।

শিরিনের স্বামী শাহীন বিকালে বলেছিলেন, সকালে হিউম্যান হলারে করে শিরিন কাচপুরে সিনহা গার্মেন্টেসে যাচ্ছিলেন। অবরোধকারীরা তাদের হিউম্যান হলারে আগুন দিলে শিরিন দগ্ধ হন।

শিরিনের খবর শুনে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে আসেন রূপগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আইয়ুব।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সকালে তারাবো এলাকায় একটি বাস পুড়িয়েছে অবরোধকারীরা। তবে ওই বাসে কেউ ছিল না। আর কোনো হিউম্যান হলারেও অগ্নিসংযোগ হয়নি।

এরপর শিরিনের স্বামীকে পুলিশ সত্য কথা বলতে বললে শাহীন বলেন, তার স্ত্রী বাসার চুলার আগুনে দগ্ধ হয়েছেন।

মিথ্যা কেন বলেছিলেন- প্রশ্ন করা হলে  শাহীন বলেন, “আশপাশের লোকজন আমাকে বলেছিল, হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলবি, শিরিন অবরোধের আগুনে দগ্ধ হয়েছে। তাহলে বিনা খরচে চিকিৎসা পাবি, আবার সরকারের কাছ থেকে সাহায্যও পাবি।”

“এই লোভে আমি মিথ্যা কথা বলেছি স্যার,” বলেন তিনি।

পুলিশের ভয়ে মিথ্যা বলছেন কি না- জানতে চাইলে শাহীন সাংবাদিকদের বলেন, “সত্যিই স্যার, আমি এবার মিথ্যা বলছি না।”