একুশের চেতনা বিশ্বে ছড়িয়ে চলে গেলেন রফিকুল

একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণার দাবিকে যিনি সামনে এনেছিলেন,  সেই রফিকুল ইসলাম আর নেই।

লাভলু আনসার নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2013, 05:49 AM
Updated : 21 Nov 2013, 07:13 AM

কানাডার ভ্যাঙ্কুভার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার মারা যান এই প্রবাসী বাঙালি।    তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।

পরিবারের সদস্যরা জানান, দুই বছর আগে রফিকুলের লিউকেমিয়া ধরা পড়ে। পরিস্থিতির অবনতি হলে গত কোরবানির ঈদের পরদিন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

স্ত্রী বুলি ইসলাম, দুই ছেলে জ্যোতি ও ঝন্টুসহ বন্ধু ও স্বজনরা শেষ সময়ে হাসপাতালে রফিকুলের পাশে ছিলেন। 

রফিকুল ইসলামের মৃত্যুর খবর জানিয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এ কে এ মোমেন বলেন,  কুমিল্লার রাজবাড়ির সন্তান রফিকুল গত ১৮ বছর ধরে কানাডায় বসবাস করলেও তার হৃদয় জুড়ে ছিল বাংলাদেশ। তিনি ছিলেন একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক।

সর্বশেষ গত অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে রফিকুলের সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিবেদকের।

সে সময় তার ক্ষীণ কন্ঠেও দেশ নিয়ে উদ্বেগ ছিল স্পষ্ট।  বাংলাদেশের সর্বশেষ খবর কি, হরতাল শেষ হয়েছে কিনা, দুই নেত্রীর সমঝোতা হচ্ছে কিনা- এই ছিল তার প্রশ্ন।

অক্টোবরে তার দেশে আসারও কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই কানাডার চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, তার হাতে আর বেশি সময় নেই।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মাদার লাঙ্গুয়েজ লাভার্স অব দ্য ওয়ার্ল্ড-এর সদস্য রফিকুল ইসলাম ও আবদুস সালামের প্রাথমিক উদ্যোগের ফলে ভাষার জন্য বাঙালির আত্মত্যাগের দিন ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ ঘোষণার প্রস্তাব প্রথমবারের মতো জাতিসংঘে পৌঁছায় ১৯৯৮ সালে।

এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক আবেদন জানানো হলে সালে জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত জানায়।

১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোতে ওই প্রস্তাব পাস হয়। পরে ২০০৮ সালে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনেও এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।

রফিকুল ইসলামের ছোটভাই সাইফুল ইসলাম সাফু মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন।