এক মঞ্চে মিলছে বহু স্বর

নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা আর সংলাপের সম্ভাবনা নিয়ে টান টান উত্তেজনার মধ্যেই বিভিন্ন অঙ্গনের শীর্ষ ব্যক্তিরা হাজির হচ্ছেন এক মঞ্চে।   

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Oct 2013, 07:03 PM
Updated : 24 Oct 2013, 11:16 AM

তাদের মধ্যে সরকার ও বিরোধী দলের নীতি-নির্ধারকরা যেমন থাকছেন, তেমনি থাকছেন বিচারপতি-আইনজীবী, ব্যবসায়ী-শিল্পোদ্যোক্তা, কবি-সাহিত্যিক-সাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মী-সংগঠক, ক্রীড়াবিদ-সংগঠক, সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা।

বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল র‌্যাডিসনে তারা সবাই সঙ্গী হচ্ছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সাত বছর উদযাপনে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম সাত বছর আগে বাংলাদেশের ও বাংলাভাষীদের জন্য ইন্টারনেটে সংবাদ জগতের যে নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছিল, তার পথ ধরে আজ এগোচ্ছেন অরো অনেকে। 

দেশের প্রথম এই ২৪ ঘণ্টার নিউজ পোর্টালের একজন মুখপাত্র বলেন, “সংবাদ সংগ্রহ ও পরিবেশনের মধ্য দিয়ে গত সাত বছর ধরে আমরা কার্যত ইতিহাস গ্রন্থনার কাজটিই করে আসছি। আমরা মনে করি, সব দায়িত্বশীল সংবাদমাধ্যমকেই এ দায়িত্ব পালন করতে হয়।”   

শুরুটা হয়েছিল ২০০৫ সালে। অন্যান্য বার্তা সংস্থার মতো ‘বিডিনিউজ’ তখন সংবাদ মাধ্যমগুলোর জন্য খবর সরবরাহ করতো। তবে দেশের অন্য সংবাদ সংস্থাগুলো টেলিপ্রিন্টারে খবর সরবরাহ করলেও বিডিনিউজ এ কাজটি করা শুরু করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে।

২০০৬ সালে বার্তা সংস্থাটির মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা বদলের পর বদলে যায় এর খোল-নলচে। সাংবাদিক তৌফিক ইমরোজ খালিদীর নেতৃত্বে নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এই প্রতিষ্ঠানটিকে দেশের প্রথম ডটকম কোম্পানির রূপ দেয়। নতুন আঙ্গিকে এর পরিচয় হয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম নামে।

২০০৬ সালের ২৩ অক্টোবরের প্রথম প্রহরে অর্থাৎ রাত ১২টা ০১ মিনিটে ওয়েবসাইটটি সব পাঠকের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশের প্রথম ইন্টারনেট সংবাদপত্র।

দিনে দিনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাজের ব্যাপ্তি যেমন বেড়েছে, তেমনি মিলেছে পাঠক, শুভানুধ্যায়ীদের সাড়া। 

গুগল অ্যানালিটিকসের তথ্য অনুযায়ী,  ২৩৫টি দেশ ও সার্বভৌম অঞ্চলের পাঠকের দৃষ্টি এখন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পাতায় পৌঁছাচ্ছে।

২০১১ সালে যেখানে প্রতি মাসে গড়ে ২০ লাখের মতো পাঠক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম পড়তেন, এখন তা এক কোটি ছাড়িয়ে গেছে।

প্রতি মাসে এখন সাড়ে ৪ কোটি বার পড়া হচ্ছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পৃষ্ঠা। গড়ে আট কোটি মিনিট পাঠক ব্যয় করছেন এই সাইটে।

গত মে মাসে মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ ও তাণ্ডবের দিনে ১০ লাখেরও বেশি পাঠক তাৎক্ষণিক সংবাদের জন্য চোখ রেখেছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে। 

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের মুখপাত্র বলেন, “বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সাংবাদিকতার ক্রান্তিকালে এই দেশের প্রথম ইন্টারনেট সংবাদপত্র বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আত্মপ্রকাশ।বাংলাদেশে সাংবাদিকতার চর্চায় নতুন মানদণ্ড নিয়ে আসাই আমাদের পরিচিতির একমাত্র দিক নয়। নতুন প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল বিষয়বস্তু নির্মাণ ও তার ব্যবহারে পাঠক-দর্শক-শ্রোতাদের অভ্যস্ত করার পথিকৃৎ হিসেবেও আমরা পরিচিত।”

সময়ের উদ্ভাবনী মেজাজকে ধারণ করে গত সাত বছরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ওয়েবসাইটে যুক্ত হয়েছে ‘মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট’। সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে থেকেও পাঠক এখন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে সঙ্গে পাচ্ছে সর্বক্ষণ।  

২০১১ সালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম যখন তাদের পঞ্চম বর্ষপূতি উদযাপন করে, ফেইসবুক পেইজে তখন তাদের ফ্যান সংখ্যা ছিল ৭৬ হাজার ২৫৭। আর দুই বছর পেরিয়ে সেই সংখ্যা এখন ৫ লাখ ৬৫ হাজারে পৌঁছেছে।  

টুইটারের পাতাতেও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম উপস্থিত সর্বক্ষণ।

যাদের ঘিরে প্রতি মুহূর্তে তৈরি হচ্ছে সংবাদ, বুধবার সন্ধ্যায় র‌্যাডিসনের বলরুমে তাদের সঙ্গেও পাঠক যোগ দিতে পারবেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে চোখ রেখেই। অনুষ্ঠানটি ওয়েবসাইটে সরাসরি দেখানোর ব্যবস্থা (ওয়েবকাস্ট) হয়েছে বলে আয়োজকরা জানান।  

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক কর্মকর্তা বলেন, গত সাত বছরে সব বয়সী সব রুচির পাঠকের জন্যই ‘আরো পরিণত, আরো ঋদ্ধ’ হয়ে উঠেছে তাদের ওয়েব পোর্টাল। অবাধ মতপ্রবাহ সুরক্ষার নামে ‘সবকিছুই প্রকাশ করার’ তথাকথিত জনপ্রিয় ধারার বিপরীতে ‘দায়িত্বশীল সম্পাদকীয় অবস্থান’ ধরে রেখেছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।   

“বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের খবর যেমন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম আর ব্লগে আলোচনার রসদ যোগাচ্ছে, তেমনি সমাজের বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিদের চিন্তাও উঠে আসছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের মতামত বিভাগে।

বাংলাদেশে নাগরিক সাংবাদিকতার প্রথম মঞ্চ তৈরি করেছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমই। শিশুদের আনন্দের খোরাক যোগাতে, ক্রীড়ামোদী, প্রযুক্তিঅনুন্ধিৎসু, সাহিত্যপ্রিয় পাঠকের রুচি বিবেচনায় গত সাত বছরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে যুক্ত হয়েছে আলাদা আলাদা সাইট।

২০০৭ সালে ইন্টারনেটে আসা  ‘কিডজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম’ শিশুদের জন্য বাংলা ভাষায় বিশ্বের প্রথম ওয়েবসাইট।

বাংলা ভাষায় সর্বশেষ প্রযুক্তি ও গেজেটের খবর ওয়েবসাইটে পরিবেশনের সূচনা টেক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের হাত ধরেই।

শিল্প ও সাহিত্যের খবর, সৃজনশীল রচনা, বিতর্ক, সমালোচনা এবং প্রদর্শনীর বহুমাত্রিক উপস্থাপনার বাংলা ওয়েবসাইট হিসাবে দেশে প্রথম কাজ শুরু করে ‘আর্টস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম’।

এই ওয়েবসাইট একদিকে দুর্লভ ধ্রুপদী সাহিত্যকে ই-বুকের আকারে ধরে রাখছে, তেমনি আবার ইন্টারনেটেই পাতা উল্টে সাময়িকী পড়ার চিরায়ত স্বাদ ফিরিয়ে এনেছে ভি-ম্যাগ বা ভার্চুয়াল ম্যাগাজিন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ‘লাইফস্টাইল’ পাঠকের সামনে হাজির করছে সমসাময়িক জীবনের নানা রঙ, নানা সুর।

খেলার খবরের পাশাপাশি শুধু ক্রিকেটের জন্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে রয়েছে আলাদা সাইট। 

দেশে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য ওয়েবসাইট চালুর অগ্রদূতও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২০০৬ সালে এসএমএস-এর মাধ্যমে এবং কণ্ঠস্বরে প্রথমবারের মতো সার্বক্ষণিক খবর প্রচার ও সম্প্রচার করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমই নতুন এই ধারাণাটির সঙ্গে বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দেয়।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সাবেক একজন বার্তা সম্পাদক বলেন, মুদ্রণ সাংবাদিকতার ‘নির্ভুল অনন্যতা’ ও সম্প্রচার সাংবাদিকতার ‘তাৎক্ষণিকতা’- এ দুই দক্ষতার সমন্বয়েই তৈরি হয়েছে এই পোর্টালের সংবাদের নির্ভরযোগ্যতা।

“দেশে-বিদেশে বাংলাদেশ থেকে প্রচারিত খবরের জন্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম পাঠক ও সমালোচকদের কাছে নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা ধরে রাখতে পেরেছে বলেই আমি মনে করি।”