রামপালবিরোধীদের সমালোচনায় মুহিত

সুন্দরবনের কাছে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বিরোধীতাকারীদের কড়া সমালোচনা করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, তাদের আল্টিমেটামের ‘পরোয়া’ তিনি করেন না।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Sept 2013, 11:38 AM
Updated : 29 Sept 2013, 03:24 PM

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মুহিত বলছেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে বলে যে আশংকার কথা আন্দোলনকারীরা বলছেন, তার পক্ষে কোন তথ্য প্রমাণ নেই।

রোববার সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ও ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন মুহিত।

বাংলাদেশ ও ভারত যৌথ উদ্যোগে বাগেরহাটের রামপালে ১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার কয়লাভিত্কি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে, যার বিরোধিতা করে আসছে বামপন্থী কয়েকদিল দল ও সংগঠন।

তাদের দাবি, সুন্দরবনের ১৪ কিলোমিটার দূরত্বে এ কেন্দ্রটি স্থাপন হলে বনের পরিবেশ ও প্রতিবেশ হুমকির মুখে পড়বে। এর প্রতিবাদের লংমার্চও করেছে তারা।  

ফাইল ছবি

অর্থমন্ত্রী বলেন, “আনু মুহাম্মদ সাহেব যাই বলুক না কেন, আমাদের কয়লানির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্র করতেই হবে। কারণ কয়লা সবচেয়ে সস্তা। আমরা এটা ব্যবহারের চেষ্টা করছি।”       

এক সাংবাদিক অর্থমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, সুন্দরবন থেকে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের দূরত্ব যথেষ্ট কি না?

উত্তরে অর্থমন্ত্রীর বলেন, যে দূরত্বে বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে তা ‘কোয়াইট সাফিশিয়েন্ট’।

রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে বলা হচ্ছে- এ ধরনের আশঙ্কার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে অর্থমন্ত্রী বলেন, “এর কোন ফ্যাক্টস নেই।”

তিনি বলেন, এই কেন্দ্র হলে পরিবেশের ওপর কী প্রভাব পড়বে তা নিয়ে বিশ্লেষণ (ইআইএ) ওয়েবসাইটে দেয়া আছে। দক্ষ লোক দিয়েই তা তৈরি করা হয়েছে।

২২ অক্টোবর রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিস্থাপন হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এটা বন্ধ করার জন্য ১১ অক্টোবর পর্যন্ত সরকারকে আল্টিমেটাম দিয়েছে আন্দোলনকারীরা।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মুহিত বলেন, “আই ডোন্ট কেয়ার দিস আল্টিমেটাম। এটাকে ইউজলেস বলেই মনে করি আমরা। এটা কান্ট্রির ইন্টারেস্টের সঙ্গে রিলেভেন্ট না।”

তবে অর্থমন্ত্রী স্বীকার করেন, কয়লাভিত্তিক কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্রই পুরোপুরি দূষণমুক্ত হয় না। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ও উন্নমানের কয়লা ব্যবহার করে দূষণ কমিয়ে আনার চেষ্টা করা যায়।

“আমি পরিবেশবাদী হিসেবে বলতে পারি, দূষণ কমানোর জন্য আমরা নির্দিষ্ট প্রযুক্তি ঠিক করে দেব। নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি সালফারযুক্ত কয়লা ব্যবহার করা হবে না।

“পরিবেশবাদীরা বলছে, কয়লা পরিবহনের সময় তা থেকে দূষণ হতে পারে। এটা নিয়ে ভেবে দেখা যেতে পারে।”

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করা হবে বলেও জানান তিনি।

অবশ্য এর আগে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানী উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করেছেন, জাহাজে ঢাকা অবস্থায় এবং জাহাজ থেকে পুরোপুরি ঢাকা কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে কয়লা পরিবহনে দূষণ হবে না।