তেজগাঁও সাতরাস্তার মোড়ে তাদের অবরোধের কারণে মগবাজার থেকে মহাখালীমুখী শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সড়কে সকাল ১০টা থেকে দুই ঘণ্টা এবং ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়কের পূর্র্ব অংশে অবরোধের কারণে মিরপুর রোডে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকে।
এ সময় বেশ কিছু যানবাহনও ভাংচুর করে শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ-ভাংচুরের মধ্যে পড়ে আতঙ্কিত হয়ে ছুটোছুটি করতে দেখা যায় পথচারীদের।
পরে পুলিশ টিয়ারশেল ছুড়ে এবং লাঠিপেটা করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে যান চলাচল শুরু হয়।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইলিয়াস আলী জানান, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা রোববার সকালে তাদের ইনস্টিটিউটের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে।
এক পর্যায়ে তারা সাতরাস্তার মোড়ে সড়কের ওপর অবস্থান নিলে সকাল ১০টার দিকে থেকে মগবাজার-মহাখালী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এ সময় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বাঁশের লাঠি হাতে সাতরাস্তায় বিক্ষোভ করতে দেখা যায় ছাত্রদের।
পরে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে বেলা ১২টার দিকে মগবাজার-মহাখালী সড়কে যান চলাচল শুরু হয় বলে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান।
শিক্ষার্থীরা যাতে আর মূল সড়কে জড়ো হতে না পারে সেজন্য পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের বিভিন্ন গলির মুখে বিপুল পরিমাণ র্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে মোহাম্মদপুর এলাকার বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ধানমন্ডি ২৭ নম্বর মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মিরপুর রোডেও যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
এক পর্যায়ে ছাত্ররা যানবাহন ভাংচুর শুরু করলে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় বলে ঘটনাস্থল থেকে জানান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক লিটন হায়দার।
পরিস্থিতি শান্ত হয়ে এলে বেলা দেড়টার দিকে মিরপুর রোডে আবার যান চলাচল শুরু হয়।
রাজধানীর উত্তর ও দক্ষিণ অংশের মধ্যে যোগযোগ রক্ষাকারী দুটি প্রধান সড়ক দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকায় আশেপাশের এলাকাগুলোতে সৃষ্টি হয় ব্যাপক যানজট। ফলে গাড়ি চালকদের ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয়।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সুপারভাইজার হিসাবে সংজ্ঞায়িত না করে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে সংজ্ঞায়িত করাসহ তিনটি দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই দেশব্যাপী আন্দোলন চালিয়ে আসছে পলিটেকনিকের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।
তাদের অন্য দাবি দুটি হলো ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের পদন্নোতির কোটা ৩৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা এবং বেতন বৈষম্য দূর করা।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবারও বগুড়া, মুন্সীগঞ্জ, শেরপুর এবং মাগুরা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এসব এলাকায় বিক্ষোভের সময় সড়ক অবরোধ, ভাংচুর ও পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
বগুড়া বিক্ষুব্ধদের সামলাতে ১৫ রাউন্ড রাবার বুলেটও ছুঁড়তে হয় পুলিশকে। এতে ৩ শিক্ষার্থী আহত হন। শেরপুরের বিক্ষোভের সময় আহত চার ছাত্রকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।