লন্ডনে বাংলাদেশি তরুণ খুন

লন্ডনে দাঙ্গাবাজদের হামলায় নিহত হয়েছেন বাংলাদেশি এত তরুণ।

সৈয়দ নাহাস পাশা যুক্তরাজ্য প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 August 2013, 06:18 PM
Updated : 13 August 2013, 07:22 PM

সোমবার রাতে ইস্ট লন্ডনের পপলারে ছুরিকাঘাতে নিহত আজমল আলমের বয়স ১৬ বছর। এই তরুণ স্কুলের কৃতি ছাত্র ছিলেন বলে বিবিসি, গার্ডিয়ান ও হাফিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়েছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেড়ানোর সময় রাত সাড়ে ৯টার দিকে পপলারের স্পে স্ট্রিটে একদল দাঙ্গাবাজের হামলার মুখে পড়েন আজমলসহ কয়েকজন বাংলাদেশি।

এর মধ্যে ছুরিকাঘাত করা হয় আজমল এবং তারে সঙ্গী আরেক তরুণকে। দুজনকে হাসপাতালে নেয়ার পর আজমলের মৃত্যু হয়। চিবুকে ছুরিকাঘাতের জখম নিয়ে অন্য তরুণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

কোনো ধরনের উস্কানি ছাড়াই আজমলদের ওপর হামলা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের পুলিশ কর্মকর্তা অ্যান্ডি ক্লেমার্স সাংবাদিকদের বলেন, আজমলরা চার বন্ধু ঘুরছিলেন। ওই সময় পাঁচ থেকে ছয়জন দুষ্কৃতি তাদের ওপর হামলা চালায়, যাদের মাথায় কাপড় বাঁধা ছিল।  

এই হত্যাকাণ্ডে সন্দেহভাজন এক যুবককে পুলিশ আটক করেছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।

আজমল পড়তেন ল্যাংডন পার্ক স্কুলে। জিসিএসই ফলের জন্য অপেক্ষা ছিল তার।  

ওই স্কুলের ক্রিস ডুনে গার্ডিয়ানকে বলেন, “আজমল আমাদের সেরা ছাত্রদের একজন। সে ছিল অসাধারণ, পরিশ্রমী ও চিন্তাশীল।”

প্রধান শিক্ষকের আশা, আজমল তাক লাগানো ফল করবেন।

পরিবারের সদস্যরাও তাই আশা করছিলেন। আজমলের এক ভাই গার্ডিয়ানকে বলেন, সে এ প্লাস পেত। তার ইচ্ছা ছিল চিকিৎসক হওয়ার।

পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা বিশেষ করে বক্সিংয়ে আজমলের বেশ আগ্রহ ছিল বলে তিনি জানান।

আজমল টেভয়েট এস্টেটে তার বাবা, মা দুই ভাই ও এক বোনের সঙ্গে থাকতেন, ওই এলাকায়ই হামলার মুখে পড়েন প্রতিশ্রুতিশীল এই তরুণ।

ঘটনাস্থলের কাছে থাকা এক ব্যক্তি গার্ডিয়ানকে বলেন, হামলাকারী যুবকরা আরেক তরুণকে খুঁজছিল। তারা ভুল করে আজমলের ওপর হামলা চালায়।

যেখানে আজমলের ওপর হামলা হয়েছে, সে স্থানটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। তদন্ত চলছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

আজমলের মৃত্যুর খবর শুনেই ঘটনাস্থলে যান টাওয়ার হ্যামলেটের সাবেক মেয়র দরস উল্লাহ। তিনি বলেন, প্রতিশ্রুতিশীল একটি তরুণের এই ধরনের মৃত্যু দেখতে হল।

“ভুল সময়ে ভুল জায়গার থাকার কারণে আজমলকে মারা যেতে হয়েছে,” বলেন তিনি।

বেদনাদায়ক এই ঘটনায় আজমলের পরিবার ভেঙে পড়েছে বলে দরস উল্লাহ জানান।

তিনি বলেন, যে এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে, ১০ বছর আগেও তা এমন ঝুঁকিপূর্ণ ছিল না।

স্থানীয় কাউন্সিলর ওলিদ আহমেদও ঘটনাস্থলে যান। তিনি বলেন, “একটি সম্ভাবনাময় জীবনের করুণ মৃত্যু ঘটল।”