শনিবার মুন্সীগঞ্জের মেদেনীমণ্ডলের খানবাড়ি এলাকায় এই দুর্ঘটনায় তার সঙ্গী আরো চারজন নিহত হন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এখনকার বিএনপি নেতা আওরঙ্গ (৫৭) ঢাকা থেকে শরীয়তপুর যাচ্ছিলেন। পথে বিকাল পৌনে ৪টার দিকে একটি বাসের সঙ্গে তার জিপের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে।
নিহত অন্যরা হলেন- যুবদলের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান জামান, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক মুন্সি জামাল উদ্দিন, যুবদল নেতা মো. ইয়াসিন ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা নুরুদ্দীন পেদা।
দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন দুজন। হতাহতরা সবাই মুক্তিযোদ্ধা আওরঙ্গের গাড়িতে ছিলেন।
লৌহজং থানার ওসি জাকিউর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আওরঙ্গের জিপটির চাকা ফেটে গেলে তা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের ডান পাশে চলে যায়। তখন ঢাকামুখী গাংচিল পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে এর সংঘর্ষ হয়।
রাত পৌনে ৯টার দিকে আওরঙ্গের মরদেহ ঢাকার কাঠালবাগানের ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের বাসায় আনা হয়। আগে থেকেই সেখানে সমবেত হন প্রয়াতের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মীরা।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাত ১০টার দিকে আওরঙ্গের ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের বাসায় যান।
প্রয়াতের স্ত্রী তাহমিনা খানক ও একমাত্র ছেলে অর্জনকে সন্ত্বনা দেন তিনি। এ সময় আওরঙ্গের পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন ফখরুল।
আওরঙ্গের ভাই কে এম আলমগীর খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রোববার সকাল পৌনে ৯টার দিকে কাঠালবাগানে ভাইয়ের প্রথম জানাজা হবে। এরপর বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় সংসদের উত্তর প্লাজায় এবং সাড়ে ১২টার দিকে নয়া পল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তার জানাজা হবে।
তিনি বলেন, মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে আওরঙ্গের দাফনের কথা ভাবা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
আওরঙ্গ ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের টিকিটে শরীয়তপুর-১ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দলের মনোনয়ন না পেয়ে ২০০১ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন তিনি।
২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপিতে যোগ দিয়ে প্রার্থী হন আওরঙ্গ। তবে এবার তিনি হারেন আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাকের কাছে।
এক সময়ের যুবলীগ নেতা আওরঙ্গের নাম ’৮০ এর দশকের পুরোটা সময়ই ছিল আলোচিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে সব সংঘর্ষের সময় তার নাম উঠে আসত।
হত্যাসহ বেশ কয়েকটি মামলার আসামি আওরঙ্গ ২০০২ সালে ‘অপারেশন ক্লিনহার্টে’ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তবে কিছুদিনের মধ্যে ছাড়া পান তিনি।
ইদানীং রাজনীতিতে অনেকটাই নিষ্ক্রিয় ছিলেন আওরঙ্গ। ঢাকার কাঁঠালবাগানের বাড়িতেই বেশিরভাগ সময় থাকতেন তিনি।
আওরঙ্গ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সদস্য ছিলেন। তার মৃত্যুতে জেলা বিএনপি সাতদিনের শোক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।