রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার ভোরে মারা যান স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বেলাল। তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।
সকালে প্রয়াতের মরদেহ নেয়া হয় তার উত্তরার বাসায়। সেখানে সকাল পৌনে ১০টার দিকে আত্মীয়-স্বজন ও ঘনিষ্ঠজনদের অংশগ্রহণে হয় প্রথম জানাজা।
এরপর তার মরদেহ নেয়া হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিমঘরে।
বুধবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মুক্তিযুদ্ধের এই সংগঠকের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাবে সর্বস্তরের মানুষ।
এরপর বেলা সাড়ে ১২টার পর মরদেহ নেয়া হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে। সেখানে হবে দ্বিতীয় জানাজা।
এরপর বেলাল মোহাম্মদের কফিন নিয়ে যাওয়া হবে শাহবাগ বেতার কেন্দ্রে, যেখানে দীর্ঘ কর্মজীবন পার করেছেন তিনি। সেখানে সহকর্মীরা প্রয়াতের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
সবশেষে বেলালের মরদেহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে হাসান আরিফ জানান।
তিনি বলেন, “প্রয়াতের ইচ্ছা অনুযায়ীই তার মরদেহ মেডিকেলে দান করা হচ্ছে।”
অসুস্থ বোধ করায় সোমবার বিকালে বেলাল মোহাম্মদকে হাসপাতালে নেয়া হয়। বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য ২০১০ সালে তাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেয়া হয়। পরের বছর বাংলা একাডেমী পুরস্কার পান কবি বেলাল মোহাম্মদ।
বেলালের জন্ম ১৯৩৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার মুছাপুর গ্রামে। ছাত্রজীবনেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ছাত্র ইউনিয়নের চট্টগ্রাম কমিটির প্রথম সদস্য ছিলেন তিনি।
১৯৬৪ সালে দৈনিক আজাদীর উপসম্পাদক হিসেবে যোগ দেন বেলাল। ওই বছরই রেডিও পাকিস্তানের চট্টগ্রাম কেন্দ্রে স্ক্রিপ্টরাইটার হিসেবে কাজ শুরু করেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বেলাল মোহাম্মদ চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রে কর্মরত ছিলেন। ২৬ মার্চ বেলাল মোহাম্মদ ও তার সঙ্গীরা মিলে কালুরঘাটের বেতার স্টেশনে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন, যেখান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করা হয়।