কুরুচি নয়, ‘তেঁতুল’ উদাহরণ মাত্র: হেফাজত

আহমদ শফীর বক্তব্য নিয়ে ‘অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেছে হেফাজতে ইসলাম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 July 2013, 10:20 AM
Updated : 13 July 2013, 10:07 PM

শনিবার সংগঠনের পক্ষে এক বিবৃতিতে বলা হয়, হেফাজত আমির স্থান কাল পাত্রভেদে ওয়াজের কৌশল অবলম্বন করে আসছেন। গ্রামাঞ্চলের মানুষের বোধোদয়ের জন্য ওয়াজে বিভিন্ন উদাহরণ দেয়ার কৌশলটি অতি পুরনো। যুগ যুগ ধরেই তা চলে আসছে।

নাস্তিক ও ইসলাম বিদ্বেষীরা দিশেহারা হয়ে সংগঠনের আমির আহমদ শফীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে বলেও অভিযোগ সংগঠনটির।

সম্প্রতি হাটহাজারীতে আহমদ শফীর একটি বক্তৃতার ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটগুলোতে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।

বক্তৃতায় শফী নারীদের চতুর্থ শ্রেণির বেশি পড়াতে নিষেধ করেন, সমালোচনা করেন সহশিক্ষার। নারীদের চাকরি না করে বাড়িতে রাখার পরামর্শ দেন তিনি। ওই বক্তৃতায় নারীদের পোশাক-আশাক নিয়ন্ত্রণ এবং জন্ম নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধেও কথা বলেন হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক।

শফীর ওই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন মহল নিন্দা জানিয়ে তার গ্রেপ্তার দাবি করে। শেখ হাসিনাও ওই বক্তব্যকে জঘন্য বলে আখ্যায়িত করেছেন।

হেফাজতের পক্ষে ওই বিবৃতি দেন সংগঠনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, নায়েবে আমির আল্লামা আব্দুল মালেক হালিম, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী এবং আল্লামা মুফতি ইজহারুল ইসলাম চৌধুরী।

এতে বলা হয়, আল্লামা শফির নামে প্রচারিত যেসব শব্দ ও ভাষাকে কুরুচিপূর্ণ আখ্যায়িত করা হচ্ছে, এ ধরনের ভাষা বই পুস্তকে, বিভিন্ন বিজ্ঞাপন চিত্রে, স্বাস্থ্য বিষয়ক লিফলেট, বুকলেটে অহরহ দেখা যায়। এই ধরনের উদাহরণ সম্বলিত ওয়াজ যুগ যুগ ধরে গ্রামগঞ্জে চলে আসছে। এসব ওয়াজকে কখনো কুরুচিপূর্ণ বলতে শোনা যায়নি।

“এ ব্যাপারে আমাদের পরিষ্কার বক্তব্য হচ্ছে, আল্লামা শাহ আহমদ শফী এদেশের আলেমকুল শিরোমনি। বাংলাদেশে মুসলমানরা যাতে কোরআন-হাদিস তথা ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী জীবন যাপন করতে পারেন, সেজন্য তিনি দিকনির্দেশনামূলক ওয়াজ করে আসছেন। তিনি ইসলামের ফরজ বিধান ‘পর্দা’ লংঘনের কুফল তুলে ধরেন সবসময়। নারী-পুরুষের বিবাহ বহির্ভূত অবাধ-অবৈধ চলাচল ও মেলামেশার ফলে যে নৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয় দেখা দিচ্ছে তার ব্যাপারে বরাবরই সতর্ক করে আসছেন। পাশাপাশি পাশ্চাত্য বিজাতীয় সংস্কৃতির প্রভাব ও অন্ধ অনুকরণ করে ইসলামের বিধান লঙ্ঘন করার কারণে সমাজে কোন ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে, তাও নিজস্ব ভঙ্গিতে মানুষের সামনে তুলে ধরে আসছেন।”
হেফাজতে ইসলামের প্রতি দেশের মানুষের সমর্থন দেখে ভীত ও দিশেহারা হয়ে শাহবাগী নাস্তিক ব্লগার ও তাদের পৃষ্ঠপোষকরা আহমদ শফী সম্পর্কে অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপকৌশল গ্রহণ করেছে বলে বিবৃতিতে বলা হয়।
“বিশেষ করে গত ৫ মে মতিঝিল শাপলা চত্বরে হেফাজতের ওপর গণহত্যার দীর্ঘ মেয়াদি প্রভাবে যখন নাস্তিক ও তাদের পৃষ্ঠপোষকতাকারিরা জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হতে শুরু করেছে, তখনই জনমতকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এ অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে।”

এতে দাবি করা হয়, আহমদ শফী নারীদের ঘরে বন্দী রাখার কথা বলেননি। তবে পরিবারে নারীদের প্রধান দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। তিনি কখনো নারীদের প্রয়োজনীয় শিক্ষার বিরুদ্ধে বলেননি। তবে প্রচলিত সহশিক্ষার কুফলের দিক তুলে ধরে এ ব্যাপারে সতর্ক করেছেন।

হেফাজত আমিরের বক্তব্যকে খণ্ডিতভাবে ধারণ করে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন হেফাজত নেতারা।