রমেশের সেই ডায়রি সংগ্রহের চেষ্টায় দুদক

পদ্মাসেতু দুর্নীতি মামলার তিন আসামির সাক্ষ্যগ্রহণের পাশাপাশি এসএনসি লাভালিন কর্মকতা রমেশ সাহের সেই ডায়রি সংগ্রহের চেষ্টা করছেন কানাডায় অবস্থানরত দুদক প্রতিনিধিদল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 May 2013, 05:16 AM
Updated : 22 May 2013, 05:16 AM
দুদক সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী বুধবার বলেন, “তদন্তের অগ্রগতির জন্যই দুদক দল কানাডায় গেছে। তারা রমেশের ডায়রি সংগ্রহের চেষ্টা করছেন।

“যদি ডায়রি না পাওয়া যায় তাহলে ডায়রির পাতা বা কপি হলেও সংগ্রহ করা হবে। পাশাপাশি অভিযুক্ত তিন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হবে।”

দুদক কার্যালয়ে সংস্থার মাসিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন দুদক সচিব।

পদ্মাসেতু প্রকল্পে ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসএনসি লাভালিনের আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ সাহ ও সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইলের বিচার চলছে কানাডার আদালতে।

ওই দুইজন ছাড়াও লাভালিনের সাবসিডিয়ারী কোম্পানি ক্যান্ডো এনার্জিসের সাবেক প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস বাংলাদেশে দুদকের দায়ের করা মামলারও আসামি। 

বিচারকাজ পর্যবেক্ষন এবং ওই তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদকের প্রধান আইনজীবী আনিসুল হক ও মামলার বাদি মির্জা জাহিদুল আলম গত ১৯ মে কানাডার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন। আগামী ২৩ মে তাদের দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

এসএনসি লাভালিনকে পদ্মা সেতুর পরামর্শকের কাজ পাইয়ে দিতে ‘ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগে গত ১৭ ডিসেম্বর বনানী থানায় সাত জনকে আসামি করে ওই মামলা করে দুদক।

এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক সেতু সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (নদী শাসন) কাজী মো. ফেরদৌস, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী রিয়াজ আহমেদ জাবের, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড প্ল্যানিং কনসালটেন্ট লিমিটেডের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশে কানাডীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসএনসি লাভালিনের স্থানীয় প্রতিনিধি মোহাম্মদ মোস্তফা।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পারস্পারিক যোগসাজসে ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্র করার মাধ্যমে পদ্মা সেতু প্রকল্পের তদারকি পরামর্শকের কাজ এর অন্যতম দরদাতা এসএনসি লাভালিন ইন্টারন্যাশনালকে পাইয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করে।

রমেশ সাহ

গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, কাকে কতো টাকা ঘুষ দেয়া হবে তা সংকেত আকারে রমেশ সাহের ডায়রিতে লিখে রাখা হয়েছিল। এতে প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা মসিউর রহমান, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী কায়সার এবং সাবেক সেতু সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ারও নাম ছিল। কানাডীয় পুলিশ ওই ডায়রি জব্দ করে।

দুদকের ব্রিফিংয়ে ফয়জুর রহমান বলেন, “তদন্ত দল কানাডায় এখন পর্যন্তে উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য উপাত্ত পেয়েছেন বলে আমরা জানি না। তবে সংগ্রহের চেষ্টা করে যাচ্ছেন।”

এক্ষেত্রে কানাডা সরকারের সহযোগিতার অভাব রয়েছে কি না জানতে চাইলে সচিব বলেন, “এখানে অনেক আনুষ্ঠানিকতার বিষয় আছে। এসএনসি লাভালিন কানাডীয়  কোম্পানি। তাদের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশের কাছে তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে কিছু সরকারি বিধিনিষেধ থাকতেই পারে। তবে দুদক দল সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। আশা করি তারা সফল হবেন।”

পদ্মাসেতু প্রকল্পে দুর্নীতি মামলা তদন্তে গঠিত দুদকের তদন্ত দলের সদস্য আব্দুল্লাহ আল জাহিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তদন্তের দেশীয় অংশের কাজ তারা গত মার্চ মাসেই শেষ করেছেন। এ বিষয়ে একটি আংশিক প্রতিবেদনও কমিশনে জমা দেয়া হয়েছে।

কানাডা সফররত তদন্ত দল ফিরে এলে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেয়া সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।