মাহমুদুরের মুক্তি চান ১৬ সম্পাদক

যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গণজাগরণের বিপক্ষে দাঁড়ানো আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার এবং পত্রিকাটির ছাপাখানা বন্ধ করার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ১৫টি দৈনিক ও একটি অনলাইন পত্রিকার সম্পাদক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2013, 10:13 AM
Updated : 18 May 2013, 10:13 AM
উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে জামায়াত-বিএনপি জোট সংশ্লিষ্ট হিসাবে পরিচিত বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দিগন্ত টেলিভিশন ও ইসলামিক টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়ারও।

তারা বলছেন, সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের অধিকারের ওপর ‘আশঙ্কাজনক হুমকি’।

শনিবার ওই বিবৃতিতে মাহমুদুর রহমানের মুক্তি এবং বন্ধ প্রতিষ্ঠান তিনটি খুলে দেয়ারও দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন, ডেইলি ইন্ডিপেন্ডেন্ট সম্পাদক মাহবুবুল আলম, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, ডেইলি টুডে সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, দৈনিক সংবাদ এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুনীরুজ্জামান, মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, নিউ এইজ সম্পাদক  নুরুল কবীর।

এ ছাড়া অন্যরা হলেন, দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দিন, নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক এ এইচ এম মোয়াজ্জেম হোসেন, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, নিউ নেশন সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, যুগান্তর নির্বাহী সম্পাদক সাইফুল আলম ও বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন।

যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারকের কথিত স্কাইপ কথোপকথন প্রকাশ এবং রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গত ১১ এপ্রিল গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই দিনই পুলিশ পত্রিকাটির ছাপাখানায় তালা ঝুলিয়ে দেয়।

অন্যদিকে ৫ মে গভীর রাতে দিগন্ত টেলিভিশন ও ইসলামিক টিভির সম্প্রচার ‘সাময়িকভাবে’ বন্ধ করে দেয়া হয়।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু জানিয়েছিলেন, লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ ও দাঙ্গা লাগানোর মত পরিস্থিতি সৃষ্টি করায় দিগন্ত ও ইসলামিক টেলিভিশনের সম্প্রচার সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে আমার দেশের মুদ্রাণালয় বন্ধ, পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তারের পর নির্যাতনের অভিযোগ, বিকল্প ব্যবস্থায় ছাপাতে না দিয়ে পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাহমুদা বেগম ও দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা দায়ের এবং দিগন্ত ও ইসলামিক টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, এহেন সিদ্ধান্ত অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক।

“অনিবার্য পরিণতি হিসেবে অনেক সাংবাদিককে বেকারত্বের কবলে নিক্ষেপ করা কোনো নির্বাচিত ও গণতান্ত্রিক সরকারের ভাবমূর্তির পক্ষে অনুকূল নয়।”

সম্পাদকরা বলেন, “আমরা মনে করি, সরকারের এই ধরনের পদক্ষেপ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অধিকারের ওপর আশঙ্কাজনক হুমকি। এই জাতীয় ঘটনা গণতন্ত্রের ভিতকে দুর্বল করবে।”

গণমাধ্যম বন্ধ ও একজন সম্পাদককে গ্রেপ্তার-নির্যাতনের সমালোচনা করে বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের সিদ্ধান্ত বহিবর্বিশ্বে বাংলাদেশের পরমত সহিষ্ণুতা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে।

যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শাহবাগে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়, যা পরবর্তিতে সারাদেশে গণজাগরণ সৃষ্টি করে।

আর শাহবাগের ওই আন্দোলন ‘ফ্যাসিবাদী’ বলে সংবাদের শিরোনাম করে খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা মাহমুদুর সম্পাদিত আমার দেশ।