ভবন ও গার্মেন্ট মালিকদের হাজিরের নির্দেশ

সাভারে ধসে পড়া রানা প্লাজার মালিক যুবলীগ নেতা সোহেল রানাসহ ওই ভবনের ৬ গার্মেন্ট কারখানার চেয়ারম্যন, এমডি ও প্রধান নির্বাহীদের হাজির করতে বলেছে হাইকোর্টের দুটি বেঞ্চ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2013, 03:19 AM
Updated : 25 April 2013, 06:50 AM
বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশিদ আলম সরকারের বেঞ্চ বৃহস্পতিবার স্বতপ্রণোদিত হয়ে প্রথম আদেশ দেয়।

আদেশে সোহেল রানা ও গার্মেন্ট মালিকদের ৩০ এপ্রিল হাজির করার জন্য সাভার থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়। আর বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয় ঢাকা জেলার পুলিশ সুপারকে।

পরে আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দের একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে রানা ও গার্মেন্ট মালিকদের তলব করে বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদের বেঞ্চ।

আদেশে বিচারপতি নাঈমা হায়দার বলেন, “এ বিষয়ে ইতিমধ্যে একটি জ্যেষ্ঠ আদালত আদেশ দিয়েছে। এরপরও জনস্বার্থ বিবেচনায় আমরা আদেশ দিচ্ছি। ওই কোর্টের তলবকৃতদের সঙ্গে আমরা আরো কয়েকজনকে যুক্ত করে দিচ্ছি। তারা ওই সিনিয়র কোর্টেই হাজির হবে।”

এই আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোখলেসুর রহমান পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সাভার থানার ওসি এবং ইউএনওকেও আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।

তাদের সবাইকে বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশিদ আলম সরকারের বেঞ্চে হাজির করতে হবে।

তলবের পাশাপাশি রুলও জারি করেছে বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদের বেঞ্চ।

শ্রম আইন-২০০৬, অগ্নি প্রতিরোধক ও নির্বাপন আইন-২০০৩, কারখানা বিধিমালা-১৯৯৭ অনুযায়ী রানা প্লাজার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংবিধিবদ্ধ দায়িত্ব পালনে বিবাদীরা কেন ব্যর্থ হয়েছেন, তার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

রানা প্লাজা ও গার্মেন্ট কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না- রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। 

স্বরাষ্ট্র সচিব, শ্রম সচিব, ঢাকার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রাজউকের চেয়ারম্যান, রানা প্লাজার মালিক মো. সোহেল রানা, বিজিএমইএসহ ওই ভবনের সব গার্মেন্ট কারখানার চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে রুলের জবাব দিতে হবে।

এদিকে বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র ও ব্লাস্ট বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে রিট আবেদন করে। এর আগেই প্রথম আদালত স্বতপ্রণোদিত হয়ে আদেশ দেয়।

ওই দুই সংগঠনের আবেদনের পর আদালত বলে, “আপনারা দুটি আবেদন একসঙ্গে নিয়ে আসেন। পরবর্তী শুনানির সময় আমরা একসঙ্গে শুনব।”

এই আদেশে রানা প্লাজায় গার্মেন্টের সংখ্যা ছয়টি উল্লেখ করা হয়। আর দ্বিতীয় আদালতের আদেশে গার্মেন্টের সংখ্যা বলা হয় পাঁচটি।

দ্বিতীয় আদালতে ইউনুস আলী আকন্দের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি, ব্যারিস্টার মো. নুর উস সাদিক, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও জাইদী হাসান খান।

বুধবার সাভার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন নয়তলা ভবন রানা প্লাজা ধসে পড়ে। বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত সেখান থেকে দুই শতাধিক লাশ উদ্ধার করা হয়।

ওই ভবনের তৃতীয় থেকে ষষ্ঠ তলায় পাঁচটি পোশাক কারখানা ছিল। আগের দিন ফাটল দেখা দেয়ায় পরও বুধবার সকালে শ্রমিকদের সেখানে কাজে যোগ দিতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ এসেছে।

কারখানাগুলোর মধ্যে নিউ ওয়েভ বটমস ও নিউ ওয়েভ স্টাইলের মালিক মাহবুবুর রহমান তাপস ও বজলুস সামাদ আদনান। ফ্যানটম অ্যাপারেলস ও ট্যাকের মালিক মো. আমিনুল ইসলাম। আর ইথারটেক্সের মালিক মো. আনিসুর রহমান।